-
জনপ্রতিনিধি
- সংসদ সদস্য
-
জেলা পরিষদ
- চেয়ারম্যান
- জেলার সাংবাদিক
- চাকরীর খবর
- প্রিয় মুখ
- রাশিফল
Mar 14, 2018 সম্পাদনা- সোহেল রেজা slider, নেত্রকোনার প্রিয় মুখ
অপু উকিল:
বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত মুখ অপু উকিল। তিনি শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য এবং বর্তমানে যুব মহিলালীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি নেত্রকোনা আসন থেকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি ছিলেন।
জন্ম:
তাঁর জন্ম ১৯৭২ সালের ৯ জানুয়ারি শরীয়তপুর জেলায়।কিন্তু বৈবাহিক সুত্রে তিনি নেত্রকোনার কেন্দুয়ার বাসিন্দা। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রাজনীতিবিদ,সান্দিকোনা গ্রামের উকিলবাড়ীর সন্তান অসীম কুমার উকিলের স্ত্রী তিনি। অসীম কুমার উকিল আওয়ামী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং তিনি ছিলেন ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম তারকা নেতা । বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ প্রচার সম্পাদক ।
রাজনীতিতে আসা নিয়ে অপু উকিল বলেন,
আমি পদ্মা পাড়ের মেয়ে। আমার বাড়ি শরীয়তপুর। সেখানেই আমার বেড়ে ওঠা। আমার শৈশব বা কৈশরে আমি দেখতাম আমার যারা খেলার সাথী তারা স্কুলে যেতে পারছে না। ঠিকমতো তিন বেলা খেতে পায় না। তাদের যে বঞ্চনা, তাদের নূন্যতম যে চাওয়া-পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়া। এই বিষয়গুলো তখনই আমাকে ভাবায়। আমি খেতে পারছি, স্কুলে যেতে পারছি। কিন্তু আমার খেলার সাথী পারে না। আমার বাড়ির পাশে কৃর্তিনাশা নদী। সেখানে বেদেরা থাকতো। আমি সেই বেদে পল্লীতে গিয়ে দেখি তাদের কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই। তখনই আমি ভেবেছি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশে তারা কেন বঞ্চিত থাকবে? তখনই আমার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন যদি বাস্তবায়ন হতো তাহলে আমার খেলার সাথীরাও খেতে পেত, স্কুলে যেতে পারতো আর বেদেরাও স্থায়ী ঠিকানা পেত। এই অসম সমাজ ব্যবস্থাই আমাকে ছাত্র জীবনে ছাত্ররাজনীতে টেনে এনেছে।
‘আমি লেখালেখি করতাম। আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি। তখন আমার দুটি বই বের হয়েছে। একটি কবিতার (ধূসর পান্ডুলিপি) আরেকটি গল্পের (সোনাদি)।’
শিক্ষা জীবন :
অধ্যাপিকা অপু উকিল এর শিক্ষাগত যোগ্যতা এম.এস.এস। তিনি ১৯৮৮ সালে শরীয়তপুর সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পাশ করেন।
ছোট বেলা থেকেই সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কিছু করার চিন্তা ছিল তার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়েই যুক্ত হন সক্রিয় রাজনীতিতে। বদরুন্নেসায় অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ার সময় প্রথমে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরে সভাপতি নির্বাচিত হন।এরপর সিটি ছাত্রলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকার দ্বায়িত্ব পালনের পরে ছাত্রলীগের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হন।
তিনি একাধারে শিক্ষকতা ,রাজনীতি ও এলাকার সামাজিক উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে সফল ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করা অপু উকিল শিক্ষা জীবন শেষে তেজগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকতা শুরু করেন।
২০০২ সালে আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে দ্বায়িত্ব দেন যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে। ২০০৪ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে নাজমা আক্তারকে সভাপতি ও অধ্যাপিকা অপু উকিলকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। এখনো নিষ্ঠার সঙ্গে সেই দ্বায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
টক-শো,সভা-সমাবেশ যেখানেই অপু উকিল সেখানেই আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান। নবম জাতীয় সংসদকে কাঁপিয়ে রেখে আলোচিতও হয়েছিলেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একেক সময় একেক বিষয় নিয়ে আলোচনার ঝড় তোলেন এ নেত্রী। তিনি ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করেন ।
বিয়ের ঘটনা:
অসীম কুমার উকিল তখন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। আর অপু উকিল একটি ইউনিটের সভাপতি। আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের দেখাশোনা করতেন। তিনি তখন বাংলার বাণীতে বসতেন,অপু উকিলসহ সহকর্মীরা বিভিন্ন পরামর্শ নিতে সেখানে যেত। সেখানে অসীম কুমার উকিলও যেতেন। আর বিভিন্ন মিছিল, মিটিং এ নিয়মিত দেখা হতো। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের সাথে নেতাকর্মীরা এখন যেভাবে কথা বলতেন পারে, তখন সেই পরিবেশ ছিল না। অসীম কুমার উকিল আমাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির নির্দেশ দিতেন,অপু উকিলসহঅন্য কর্মীরা তা পালন করতো।
এক সাক্ষাত কারে উপু উকিল বলেন,
আমার বিয়ের প্রস্তাবটা কাদের ভাই দিয়েছেন। একদিন বাংলার বাণীতে কাদের ভাই আমাকে বললেন,‘তুমি প্রেম করো না। তোমার বিয়েটা আমি ঠিক করে রেখেছি।’ আমি মনে করেছিলাম, তিনি মজা করেছেন। আমিও বলেছি আগে পড়াশোনা শেষ করি। তারপর আপনি বিয়ে দিয়ে দিয়েন। ঠিক তেমনিভাবে তিনি (ওবায়দুল কাদের) অসীম কুমার উকিলকেও একই কথা বলেন। এরপর একদিন কাদের আমাকে ভাই বললেন,‘দেখ হিন্দু মেয়েরা রাজনীতিতে কম আসে। আরে এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের বড় পদে কোন হিন্দু ছেলে যায়নি। আমি চাই তোমারা যেন রাজনীতি থেকে হারিয়ে না যাও। তাই তোমাদের বিয়ে দিতে চাই আমি। তবে আগে তোমরা কথা বলো। দুইজনকে ভালো লাগলেই তোমরা আগাতে পার।’
তাকেও (অসীম কুমার উকিল) তিনি একই কথা বলেছেন। এরই মধ্যে কাদের ভাই জননেত্রী শেখ হাসিনাকেও বিষয়টা জানিয়ে ছিলেন। এরপর বিএনপির আমলে আমি বেগম বদরুন্নোছা কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমি সেখানে অংশ নেই। ছাত্রদলের নেতারা ভোট কারচুপি করার জন্য অনেক গোলমাল করেছিল। আমরা ভেতরে আটকা পড়লাম। সে সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি অসীম কুমার উকিলকে নির্দেশ বললেন ওখানে কী সমস্যা হচ্ছে দেখো। এটা প্রধানমন্ত্রীর একটা পরোক্ষ সমর্থন ছিলো। এরপর আমাদের মধ্যে কথা শুরু হয়। তবে প্রেম বলতে যেটা বুঝায় যে আলাদাভাবে নীরবে কথা বলা, সেটা আমরা করিনি। আর মোবাইল তো ছিল না। মধুর ক্যান্টিন, পার্টি অফিসে গেলেই অমাদের কথা হতো। তবে সেখানে রাজনৈতিক কথাই ছিল বেশি।
পরিবারিক জীবন সম্পর্কে অপু উকিল জানান,
পরিবারের সবাই আমাকে রাজনীতি করতে উৎসাহ দিয়েছে। আর আমার বিয়ের পরে আমার শ্বশুরবাড়ির সবাইও আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। আমার হাজবেন্ড তো (আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল) আছেই, বিশেষ করে আমার শাশুড়ি আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন।
আমার দুই সন্তান। বড় ছেলে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ছোট ছেলে এইচএসসিতে পড়ে। তারা যখন ছোট ছিল, তাদের আমি তেমন সুযোগ দিতে পারি নাই। তারা এখন বড় হয়ে গেছে। কিন্তু যখন যুব মহিলা লীগের দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন বড় ছেলের বয়স ছিল সাড়ে সাত বছর, আর ছোট ছেলের বয়স ছিল দেড় বছর। সেসময় তাদেরকে আমি দিতে পারিনি। সাংগঠনিক কারণে বিভিন্ন এলাকা সফর করতে হয়েছে। বড় ছেলের পড়াশোনার দেখাশোনা এবং ছোট ছেলের খেয়াল রাখতে পারি নাই। ছোট ছেলেকে আমি কারো কাছে রেখে যেতাম। সে ‘মা’ ‘মা’ করে কাঁদতো। তাকে আমি মোবাইলে কথা বলে ঘুম পাড়াতাম। আর বাচ্চাদের ছোট সময়ে মায়ের পাশে থাকা দরকার। কিন্তু ছোট ছেলের আমি সেভাবে সময় দিতে পারিনি। তারপরও তারা নিজের প্রচেষ্টায় অনেক ভালো করেছে। তবে আমি মনে করি আমি যদি সময় দিতে আরও বেশি ভালো করত।
তিনি আরো বলেন, স্বামী-স্ত্রী দুইজন রাজনীতি করলে অনেক সুবিধা। কারণ বিভিন্ন জায়গায় আমরা এক সাথে চলতে পারি। আমি তাঁর বিষয়টা বুঝি। আমারটাও আমার স্বামী বুঝেন। রাঙ্গামাটিতে যখন পাহাড় ধস হয়েছিলো সেই সময় আমি অসুস্থ ছিলাম, কিন্তু আমার স্বামী দলের প্রয়োজনে সেখানে ছুটে গেছেন। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে বলত,‘আমি অসুস্থ হলাম কিন্তু সে আমাকে রেখে চলে গেলো’।
কিন্তু এ চিন্তাটা আমার ক্ষেত্রে আসেনি। আমাদের সন্তান অনেক কষ্ট করেছে কিন্তু আমার স্বামী ছাড় দিয়েছে। সন্তানের এখন আমাদের সন্তান বড় হয়ে গেছে। তাই রাজনীতি করার সুবিধাও বেশি। এলাকায় দুইজন একসাথে যাই। দুইজনকে পাশে পেয়ে এলাকাবাসীও আনন্দ পায়। রাজনীতিই আমাদের একটা পরিবার হয়ে গেছে।
তথ্যসূত্র: বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সাক্ষাৎকার
সম্পাদনা: সোহেল রেজা, সম্পাদক নেত্রকোনার আলো ডটকম।
Apr 08, 2020 ০
Apr 08, 2020 ০
Apr 08, 2020 ০
Apr 08, 2020 ০
Apr 08, 2020 ০
নেত্রকোনা অনলাইন রিপোর্টার্স ক্লাবের উদ্যেগে সমাজ...
Feb 23, 2020 ০
নেত্রকোনায় আগামীকাল থেকে দুই দিন ব্যাপী বসন্তকালীন...
Feb 13, 2020 ০
স্মৃতির পাতায় ডাঃ আব্দুল হামিদ খান : আলী আমজাদ
Feb 05, 2020 ০
বিমান পরিচালনা পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যান নেত্রকোনার...
Jan 27, 2020 ০
Apr 08, 2020
Apr 08, 2020
Apr 08, 2020
Apr 08, 2020
Apr 08, 2020
Apr 08, 2020
Apr 08, 2020
May 19, 2018
May 08, 2018
Nov 25, 2018
Jul 10, 2018
Jul 06, 2018
Jul 29, 2018