-
জনপ্রতিনিধি
- সংসদ সদস্য
-
জেলা পরিষদ
- চেয়ারম্যান
- জেলার সাংবাদিক
- চাকরীর খবর
- প্রিয় মুখ
- রাশিফল
ফেব্রু ২১, ২০১৯ সম্পাদনা- সোহেল রেজা নেত্রকোনা, বিশেষ খবর, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, সারাদেশ
আলী আহাম্মদ খান আইয়োব, নেত্রকোনার আলো ডটকম:
দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম । পূর্ব পাকিস্তান নাম হয়েছিল ১৯৫৫ সালে। পূর্বে এর নাম ছিল পূর্ববঙ্গ। পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ব বঙ্গেও সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের শুধু ধর্ম ছাড়া অন্যকোন বিষয়ে মিল ছিল না। পূর্ব বাংলার সকল নাগরিকই মুসলমান ছিল তা নয়। তবে পূর্ব বঙ্গের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের ভাষা ছিল বাংলা ।
পাকিস্তান আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়েছিল কোটি কোটি মুসলমান। পাকিস্তান একটি মুসলিম রাষ্ট্র। পাকিস্তানের মুসলমানদের ভাষা উর্দূ, তাই উর্দূই হবে পাকিস্তানের সরকারি ভাষা। পাকিস্তানী শাসক গোষ্টীর চাপিয়ে দেয়া অকাট্য, অন্যায় ঐ যুক্তি পূর্ব বঙ্গের বাঙালি জাতি মেনে নিতে চায়নি। পূর্ববঙ্গে এর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে বাঙ্গালিরা । সে প্রতিবাদ পূর্ব বঙ্গের স্থানে স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে ঢাকা সহ সারা দেশে যুব সমাজ মাতৃভাষার মর্যাদা রার্থে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। নেত্রকোনা শহরেও মাতৃভাষার মর্যাদা রার্থে আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটেছিল।
ঢাকা শহরে ভাষা আন্দোলনের সংবাদ নেত্রকোনাবাসী জানত একটু বিলম্বে । কেননা সে সময় ঢাকার সঙ্গে নেত্রকোনা শহরের ব্যবধান ছিল প্রায় ২৪ ঘন্টা। ঢাকার পত্রিকা ২৪ ঘন্টা ব্যবধানে নেত্রকোনায় পৌঁছাত। শুধু নেত্রকোনা শহর নয় সারা দেশের অনেক মহকুমা শহরের সঙ্গে ঢাকার ২৪ ঘন্টার ব্যবধান ছিল। এছাড়া প্রতিটি মহকুমা শহরেই সংবাদপত্র পাঠক ছিল সীমিত। নেত্রকোনা শহরও এর ব্যতিক্রম ছিলনা। সে সময় নেত্রকোনা শহরে দৈনিক আজাদ ও ইত্তেফাক পত্রিকার কয়েকজন পাঠক ছিল মাত্র। সপ্তাহে আসত ইত্তেফাক ও সৈনিক। সৈনিক পত্রিকায় ভাষা আন্দোলন সংক্রান্ত খবর বেশি ছাপা হতো।
একদিন বিলম্বে আসা দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোর পৃষ্টা চষে নেত্রকোনার রাজনৈতিক সচেতন পাঠকরা ভাষা আন্দোলনের খবরা খবর জানতো। যদি রাজনৈতিক সচেতন কেউ ঢাকা থেকে আসতো তার কাছ থেকে নেত্রকোনার কেউ কেউ ভাষা আন্দোলনের তাজা খবরটি পেতো। গ্রামের স¦শিতি অথবা অল্প শিতি লোকজন নেত্রকোনার শহরে এলে ভাষা আন্দোলনের খবর নিয়ে যেতো। তাও দু তিন সপ্তাহের পূর্বের খবর পৌঁছাত গ্রামে এভাবে। সে মাধ্যমে মূখে মুখে প্রচার হতো ভাষা আন্দোলনের খবর। এভাবে ভাষা আন্দোলনের জনমত শেকড় প্রোথিত হয়েছিল। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ পূর্ব বাংলায় মাতৃভাষা রার সংগ্রামে ধর্মঘট সাড়া দিয়ে কাস বর্জন করেছিল । নেত্রকোনা শহরে সে সময় ৪ টি বিদ্যালয় ছিল। এর মধ্যে ৩ টি বালক ও ১ টি বালিকা বিদ্যালয়। নেত্রকোনা কলেজ সে সময় প্রতিষ্ঠা হয়নি। নেত্রকোনা কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা মাতৃভাষার মর্যাদা রার্থে সে দিন সোচ্চার হয়ে উঠেছিল। সে ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল তারা ছিল নেত্রকোনা শহরের অনেকেই সংস্কৃতি কর্মী। তাদের যারা অনুপ্রাণিত ও অভিভাবকত্ব করেছিল তারা ছিল নেত্রকোনা শহরের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর মানুষ। সে দিন সম্পর্কে তৎকালীন দত্ত হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র মোহাম্মদ ফুলে হুসেন তাঁর এক প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন-
“…………১১ মার্চের ধর্মঘট ও মিছিল সংগঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করি। বিশেষ করে বলতে হয় যে, আঞ্জুমান হাই স্কুলের কাসে কাসে ঢুকে ছাত্রদের বুঝিয়ে বুঝিয়ে বের করে আনি। এখানে খুবই প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় একটি ঘটনা উল্লেখ করছি। তখন নেত্রকোনা মহকুমা প্রশাসক (এস.ডি.ও) ছিলেন গিয়াস উদ্দিন আহমেদ। নিখিলদার কথা মতো স্থির করা হলো এস.ডি.ও সাহেবকে এজলাসে উঠতে বাধাদেয়া হবে। ছাত্ররা আমরা মিছিল করে আঞ্জুমান হাইস্কুল থেকে যখন ফৌজদারী কোর্টের সামনে রাস্তা দিয়ে দত্ত হাই স্কুলের দিকে যাচ্ছি, সে সময় দেখা গেল এস. ডি. ও সাহেব কোর্টের দিকে যাচ্ছেন। মিছিল নিয়ে আমরা সে দিকে এগিয়ে গেলাম। সামনে নিখিলদা ও তাঁর সমবয়সী এরা কয়েকজন (যাদের নাম আমি মনে করতে পারছিনা )। তাঁরা এসডিও সাহেবকে এজলাসে না উঠতে অনুরোধ করতে লাগলেন । এস.ডি.ও কিন্তু এজলাসের দিকে যেতে লাগলেন। সে সময় নিখিলদার ইঙ্গিতে আমরা কয়েকজন রাস্তায় শোয়ে পড়লাম। এস.ডি.ও সাহেব থমকে দাড়ালেন, কিন্তু থামলেন না। কদম বাড়িয়ে রাস্তায় শোয়া একজনকে ডিঙ্গিয়ে গেলেন। আবার পা তুললেন কিন্তু কি যেন ভাবলেন তখন। তারপর পিছু হটে এলেন।
১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে ছাত্র মিছিলে গুলি হয় । যদিও সে দিনের মিছিলকে ছাত্র মিছিল বলা হয় কিন্তু সে মিছিল আর ছাত্র মিছিল ছিল না। সে মিছিল সকল শ্রেণীর মিছিলে পরিণত হয়ে ছিল। সে মিছিলে গুলিতে ছাত্র, শ্রমিক, সরকারি কর্মচারী সহ নানা পেশার মানুষ, বিশেষ করে স্কুল, কলেজের ছাত্ররা আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। শহরের বুদ্ধিজীবিগণ বেশ তৎপর হয়ে ওঠেন। ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে নেত্রকোনা কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক আমিরুল্লাহ বাহার চৌধুরীকে আহবায়ক ও অছিম উদ্দিন আহমেদ কে যুগ্ম আহবায়ক করে ভাষা সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়।
সে কমিটি সম্পর্কে কমিউনিষ্ট নেতা ও সাংবাদিক শাহ আবদুল মোত্তালিব তাঁর এক স্মৃতিচারণ মূলক লেখায় উল্লেখ করেছেন –
“ …….. কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মো: ওয়াজেদ আলী, আবদুল খালেক, সত্য কিরন আদিত্য , কুমুদ রঞ্জন বিশ্বাস, নকুল সিংহ, এম.এ. মজিদ, ফজলুর রহমান খান প্রমুখ। পরবর্তী সময় আমিরুল্লাহ বাহার চৌধুরী আহবায়কের দায়িত্ব পালনে অপারগতা জানানোর প্রেক্ষিতে অছিম উদ্দিন আহমেদকে আহবায়ক এবং গাজী মোস্তফা হোসেন কে যুগ্ম আহবায়ক করে কমিটি পূর্ণগঠিত হয়।’’
একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় সে সময় নেত্রকোনায় মুসলিমলীগ ভাষা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল । নেত্রকোনা টাউন কমিটি মুসলিম লীগের সেক্রেটারী ছিলেন অছিম উদ্দিন আহমেদ। মুসলিমলীগ নেত্রকোনা মহকুমা কমিটি ও টাউন কমিটি ভাষা আন্দোলন ও আন্দোলনকারীদের প্রেরণা দাতাদের কটা করে ‘বুলেটি-১ সতর্কবাণী’ নামে একটি প্রচারপত্র বিলি করেছিল। সে প্রচারপত্রে অছিম উদ্দিনের নামও প্রচারকদের তালিকায় মুদ্রিত হয়েছিল। সে বুলেটিনে ভাষা আন্দোলনের অন্তরালে বিদেশী শত্রুর ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করে ছিল। সে প্রচার পত্রের মূল বক্তব্য ছিল পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রকে রা করে মুসলিমলীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান করা।
পূর্বেই উল্লেখ করেছি নেত্রকোনা শহরে ভাষা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান ছিল মুসলিম লীগের নেতা, কর্মীরা। আর পে অবস্থান নিয়েছিল সাংস্কৃতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী ও তরুণ সমাজ। এদের অনেকেই তৎকালীন নেত্রকোনায় কমিউনিষ্ট পার্টির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তরুণ কলেজ ছাত্র ও কিশোর স্কুল ছাত্রদের অনুপ্রাণিত করেছিল উর্পযুক্ত শ্রেণীর মানুষ জনেরা।
প্রথম ধাপেই মুসলিমলীগ ভাষা আন্দোলনের বিপে অবস্থান নেয়। পরবর্তী সময় নেজামে ইসলামও রুভাবে ভাষা আন্দোলনের বিপে নেত্রকোনায় অবস্থান নিয়েছিল।
১আগষ্ট ১৯৫৩ সালে কিশোরগঞ্জের হযরত নগরে নেজামে ইসলাম পার্টির জন্ম। সে পার্টির জন্মণ থেকেই মৌ. মঞ্জুরুল হক সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি প্রথম থেকেই নেজামে ইসলাম এর নেত্রকোনা মাহকুমা কমিটির সভাপতি ছিলেন। পূর্বে মোঃ মনঞ্জুরু হক মুসলিমলীগে থেকে ভাষা আন্দোলনের বিপে ছিল, পরে নেজামে ইসলামের ব্যানারে থেকেও বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিল। সে সময় মৌ. মঞ্জুরুল হক উর্দূ ভাষার গুণ কীর্তন গেয়ে ভাষা আন্দোলনের বিপক্ষে বিবৃতি দিয়েছিল। যা সাধারণ মানুষের মাঝে বিতরন করা হয়েছিল মুদ্রিত আকারে । এতে নেজামে ইসলামীদের ধারণা ছিল সাধারন মানুষ তাদের বিবৃতি পড়ে ভাষা আন্দোলনের বিরুদ্ধাচরণ করবে।
নেত্রকোনা শহরের দত্ত হাই স্কুল থেকেই প্রথম দিকে নেত্রকোনায় ভাষা আন্দোলনের স্রোত বইতো। ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে দত্ত হাই স্কুলের রেক্টর জ্ঞানেশ রায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভা আহবান করে ছিলেন। সে কমিটির সেক্রেটারি এডভোকেট প্রফুল্ল চৌধুরী ও কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মৌলানা আব্দুল কাদের ভাষা আন্দোলনের পক্ষে মত ব্যক্ত করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল দত্ত হাই স্কুলকে ভাষা আন্দোলনের পে ব্যবহার করা হবে।
চন্দ্রনাথ হাই স্কুলের রেক্টর ছিলেন সুখরঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি ভাষা আন্দোলনের প্রথম ধাপ থেকেই জড়িত ছিলেন। চন্দ্রনাথ হাই স্কুলের ছাত্ররা ভাষার মর্যাদার দাবীতে কাস বর্জন করে মিছিলে গেলে রেক্টর সুখরঞ্জন চক্রবর্তী বাঁধা দিতেন না। বরং মৌন সমর্থন দিয়ে ছাত্রদের অনুপ্রাণিত করতেন।
আঞ্জুমান হাইস্কুলের রেক্টর ছিলেন এস.এম.এন আজাদ। তার অবস্থান ছিল ভাষা আন্দোলনের বিপক্ষে সে স্কুল কমিটিও ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ছিল না। কেননা সে কমিটির অনেকেই ছিল মুসলিম লীগের লোক। আঞ্জুমান স্কুলের শিকসহ ছাত্রদের ভাষা আন্দোলনে সমর্থন নিষিদ্ধ ছিল। সে বাঁধা উপেক্ষা করে আঞ্জুমান স্কুলের অনেক ছাত্র শিক ভাষা সংগ্রামে সম্পৃক্ত হয়ে ছিলেন। তৎকালীন শিক্ষক ওয়াজেদ আলী ভাষা আন্দোলনে যোগ দিতে চাকরী ইস্তফা দিয়ে ছিলেন ও ভাষা সংগ্রামে যোগ দিয়ে ছিলেন। তৎকালীন আঞ্জুমান স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র আজিম উদ্দিন আহামেদ ভাষা সংগ্রামে যোগ দিয়ে ছাত্র জীবন ধ্বংস, জেল-নির্যাতনের শিকার হয়ে ছিলেন। আজিম উদ্দিন আহমেদকে ১৯৫৩ সালের নভেম্বর মাসে মুসলিম লীগ সরকারের নির্দেশে স্কুল কর্তৃপ রাজটিকিট দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছিল। পরবর্তী সময় আর তাঁর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি। আজিম উদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র তথা স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ছিল সে ভাষার আন্দোলনের পক্ষে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেছিল। সে সময় আজিম উদ্দিন আহমেদ সরকার কে কটা করে ও ভাষা আন্দোলনের পে বেশ কিছু কবিতাও লিখে ছিলেন। সেগুলো সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকাসহ অনেক সাময়িক পত্রে ছাপা হয়েছিল।
২১ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সরকারের লেলিয়ে দেয়া বাহিনী গুলি চালালে সারাদেশে সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়ে। ২৫ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনার স্কুল, কলেজের ছাত্ররা মিছিল করে স্থানীয় এম.এল.এ-বাসায় যায়। সে সময় নেত্রকোনায় মুসলিম লীগ দলীয় এম.এল.এ ছিলেন আছান আলী মোক্তার। ছাত্ররা সে দিন তাকে সরকার থেকে পদত্যাগ করতে চাপ দিয়েছিল। সে দিন বিক্ষুদ্ধ ছাত্রদের উপর পুলিশ লাঠি র্চাজ করে তাড়িয়ে দিয়েছিল। সেখান থেকে রুকন উদ্দিন নামক জৈনেক ছাত্রকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল।
একুশে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গ্রেফতার করেছিল ফজলুর রহমান খান, কিতাব আলী,আব্দুল কদ্দুছকে। গ্রেফতারের পরোয়ানায় ফেরানী হয়ে ছিলেন শাহ আব্দুল মোত্তালিব ও শান্তি ভট্রাচার্য। নেত্রকোনা শহর কেন্দ্রিক ভাষা আন্দোলন ক্রমে থানা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। সে আন্দোলন থানা পর্যায় পর্যন্ত আরো বিস্তৃত ঘটাতে নেত্রকোনা শহরের নেতৃবৃন্দ নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অগ্রসর হয়েছিলেন। সে সময় আটপাড়া ও মদন এর সাংগঠনিক তৎপরতা দায়িত্ব নিয়েছিলেন আব্দুল খালেক। শাহ আব্দুল মোত্তালিব কেন্দুয়া, গাজী মোস্তফা হোসেন ও শান্তিরায় কাজ করেন মোহনগঞ্জ ও বারহাট্রায়। পূর্বধলায় সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়াতে সফর করে ছিলেন শামসুল হক তালুকদার।
সমগ্র নেত্রকোনা মহকুমায় ক্রমাগত ভাবে সে সময় ভাষা সংগ্রামের বেগ সৃষ্টি হয়েছিল। বিভিন্ন থানা পর্যায়ে স্কুলগুলোর ছাত্র ছাত্রীরা কাস বর্জন করে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় মিছিল করতো। সে সময় পূর্বধলায় নেতৃত্ব দিয়ে ছিলেন আব্দুল ওয়াদুদ খান, জয়নাল আবেদীন প্রমুখ। মোহনগঞ্জে আব্দুল মজিদ, বারহাট্রার আলতাবুর রহমান খান, কেন্দুয়া আব্দুল হেকিম, আব্দুস সহিদ সহ অনেক ছাত্রনেতা। এছাড়া নেত্রকোনায় ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে আরো প্রত্য জড়িত ছিলেন তসদ্দক আহমেদ, শামছুদ্দিন, মজির উদ্দিন আহমেদ, মোহনী মোহন সেন রায়, বীরন্দ্রচন্দ্র সরকার, আব্দুল আজিজ, কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমূখ।
নেত্রকোনা মাহকুমার যে সকল ছাত্ররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছিল, তারাও ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে ছিলেন। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য ড.সফর আলী আকন্দ ,শাহবুদ্দিন আহমেদ, আব্দুল মোমিন খান, কে,এম,ফজলুল কাদের সহ আরো অনেকে।
কে. এম. ফজলুল কাদের ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে পড়ালেখা করতেন। সেখানে তিনি ভাষা সংগ্রামের মিছিল মিটিং এ অংশ নিতেন। সে কারণে কে. এম. ফজলুল কাদেরের উপর হুলিয়া জারি হয়েছিল। হুলিয়া নিয়ে তিনি কিছু দিন ফেরারি জীবন যাপন করেছিলেন।
ডা. সফর আলী আকন্দ, শাহাবুদ্দীন আহমেদ, আব্দুল মোমিন খান সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত থেকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে ছিলেন।
জানু ২৬, ২০২০ ০
জানু ২৬, ২০২০ ০
জানু ২৬, ২০২০ ০
জানু ২১, ২০২০ ০
জানু ২১, ২০২০ ০
ভাষা সৈনিক ডাঃ এম এ হামিদ খানের ইন্তেকাল, সর্বস্তরের...
জানু ২৬, ২০২০ ০
টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (টিএসসি) স্থাপন একনেকে অনুমোদন...
জানু ২৬, ২০২০ ০
নেত্রকোনার পূর্বধলায় সরকারি জায়গার গাছ কেটে নিয়েছে...
জানু ২৬, ২০২০ ০
নেত্রকোনায় দৈনিক ভোরের দর্পণ পত্রিকার ২০তম প্রতিষ্ঠা...
জানু ২১, ২০২০ ০
নেত্রকোনায় আল আমিন খান পাঠানের ১৭তম মৃত্যু-বার্ষিকী...
জানু ২১, ২০২০ ০
মে ১৯, ২০১৮
অক্টো ১৬, ২০১৮
নভে ২৫, ২০১৮
জুলা ১৮, ২০১৯
জুলা ১০, ২০১৮
জুলা ০৬, ২০১৮
জুলা ২৯, ২০১৮