-
জনপ্রতিনিধি
- সংসদ সদস্য
-
জেলা পরিষদ
- চেয়ারম্যান
- জেলার সাংবাদিক
- চাকরীর খবর
- প্রিয় মুখ
- রাশিফল
Jun 15, 2019 রাকিব উদ্দিন ভিন্ন খবর
জীবনে রক্তের গুরুত্ব অপরিসীম। এক ব্যাগ রক্ত একটি জীবন বাঁচাতে অমূল্য ভূমিকা পালন করে। জীবনে রক্তের প্রয়োজন কতটা তা উপলব্ধি করেছেন হয়তো সবাই। তেমনি একজন মো. জাবেদ নাছিম।
তিনি বাংলাদেশের ‘ও’ নেগেটিভ গ্রুপের একজন সর্বোচ্চ রক্তদাতা। এ পর্যন্ত ১৬৯ বার রক্ত দান করেছেন তিনি। এর মধ্যে ৪৮ বার (৩০-১৫০ মিলি) শিশুদের এবং ১১৯ বার (৪৫০ মিলি) হোল ব্লাড এবং ২ বার প্লাটিলেট দিয়েছেন।
মো. জাবেদ নাছিম মানুষকে রক্ত দিয়ে প্রশান্তি পান। তিনি মনে করেন, তার রক্তেই মিশে আছে মানুষের উপকারে ছুটে চলার প্রবল নেশা। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাংগরা থানার পীর কাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার রক্তদান শুরুটা সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার লাইনগুলোর মতোই ‘আঠারো বছর বয়স কী দুঃসহ, স্পর্ধায় নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি।
১৯৮৬ সালে ২৭ অক্টোবরে মাত্র ১৮ বছর বয়সে রক্তদান শুরু করেন তিনি। বাংলাদেশ টেলিভিশনে এক মুমূর্ষু রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন এমন একটি বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ে তার। সেই থেকেই নাছিমের রক্তদানের আগ্রহের সূচনা। তবে নাছিম তখনও নিজের রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে অবগত নন।
তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি চলছিল। এ সুযোগে নিজের রক্তের গ্রুপ জেনে নিলেন তিনি। নিজের রক্তের গ্রুপ ‘ও’ নেগেটিভ জানার পরে তার উল্লাস দেখে কে! আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন তিনি। এ উল্লাসের অন্যতম কারণ সমাজে ‘ও’ নেগেটিভ রক্তের বিশেষ গুরুত্ব। শুধু রক্ত দিয়েই নয়, ১৯৮৭ সালে করেছেন মরণোত্তর চক্ষুদান নিবন্ধন। নাছিম কোয়ান্টাম ব্লাড ব্যাংক ও পুলিশ ব্লাড ব্যাংকের একজন গোল্ডেন ক্লাব সদস্য।
মো. জাবেদ নাছিল জানালেন, জীবনে অন্যের জন্য কিছু করতে না পারলে মানুষ হয়ে কেন জন্মানো! সব কিছুতে টাকা থাকতে হবে, এমনটা নয়। এখানে মানুষের কল্যাণে কাজ করার ইচ্ছায় মূল বিষয়।
রক্তদানের জন্য নাছিম ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদকও পেয়েছেন। এর মধ্যে, আইজিপি পদক, জেলা পুলিশ পদক, কুমিল্লা জেলা থেকে সেরা রক্তদাতা সম্মাননা স্মারক ছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে সম্মাননা স্মারক পেয়েছেন তিনি।
নাছিম জানালেন, পুরস্কার বা সম্মাননা পাওয়া মুখ্য বিষয় নয়, মানুষের উপকারে আসতে পেরেছি এতেই আনন্দ বোধ করি।
শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও রক্ত দিয়েছেন নাছিম। পেশাগত প্রয়োজনে ভ্রমণ করেছেন বিশ্বের ১৭টি দেশে। এ সময় সিঙ্গাপুরে ৩ বার, ভিয়েতনামে ২ বারসহ দেশের বাইরে মোট ৭ বার রক্তদান করেছেন তিনি।
নাছিম জানালেন তার রক্তদানের ৩৩ বছরের অভিজ্ঞতার কথা। তিনি জানালেন, শিশুদের রক্ত দেয়ার জন্য ৪ মাস অপেক্ষা করতে হয়নি। মাত্র ৩০-১৫০ মিলি রক্ত, ৪ মাসের আগেই দিয়ে দিয়েছি।
গল্পের মাঝে এক ভয়ঙ্কর সত্য তুলে ধরলেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ২৫ নভেম্বর মৃত্যু হয় নাছিমের সন্তানের। তখন হাসপাতালে এক শিশুর রক্তের প্রয়োজন ছিল। সন্তানের দুঃখ ভুলে চলে গেলেন অপরের প্রয়োজনে। রক্ত দিলেন ৬০ মিলি। এরপর নিজের সন্তানের জন্য বাকি কর্তব্যটুকু পালন করেন তিনি।
সিলেট মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, ঢাকার রেড ক্রিসেন্ট, কোয়ান্টাম ব্লাড ব্যাংক, পুলিশ ব্লাড ব্যাংকসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের বেশ কিছু জায়গায় রক্ত দিয়েছেন তিনি। এরমধ্যে সন্ধানীতেই বেশি রক্ত দিয়েছেন তিনি।
নাছিম আরও জানালেন, রক্ত দিলে মানুষের উপকার হয়। কিছুদিন পরেই তো শরীরে নতুন রক্ত তৈরি হয়। মানুষের যখন রক্তের প্রয়োজন হয়, তখন রক্ত দিলে মানসিক যে তৃপ্তি, পৃথিবীর অন্য কিছুর বিনিময়ে সেই তৃপ্তি পাওয়া যাবে না। আমার রক্তে একজন মানুষ বেঁচে উঠছেন এর চেয়ে আনন্দদায়ক আর কী হতে পারে জীবনে! মানুষ তো মানুষের জন্যই।
রক্তদান নিয়ে দুঃখের স্মৃতিও রয়েছে নাছিমের। নাছিম তখন গাজীপুরে বসবাস করতেন। ঢাকার সিএমএইচে একজনের রক্তের প্রয়োজন। গাজীপুর থেকে ঢাকায় আসতে আসতে অনেকটা সময় লাগে নাছিমের। অনেক রাত হয়ে যায় আসতে আসতে। হাসপাতালে রাত ১০টার পরে কোনো রক্ত নেয়া হয় না। এতে করে রাতে আর রক্ত দিতে পারেননি তিনি। পরে ওই রাত হাসপাতালেই কাটে তার। সকালে প্লাটিলেট দিলেও পরে লোকটা মারা যায়। এছাড়া একই দিনে ঢাকায় নিজের ভাগিনা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি রোগীকে রক্ত দেয়ার অভিজ্ঞতাও রয়েছে নাছিমের।
নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও জানালেন নাছিম। থ্যালাসিমিয়া, আগুনে পোড়া ও গরিব রোগীদের জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে একটি ব্লাড ব্যাংক করতে চান তিনি। যেখানে বিনা খরচে সবাই রক্ত নিতে পারবে। এজন্য সমাজে বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. এড্রিক বেকার ব্লাড ফাউন্ডেশনের সদস্য আনিকা মোস্তাফিজ জানান, আমার দাদু কিডনি ডায়লাইসিসের রোগী হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছিলেন। অনেকদিন ধরে দাদুর জন্য দুর্লভ ও নেগেটিভ রক্ত খুঁজেও মেলেনি। রক্ত না পেয়ে খুব হতাশ ছিলাম এমন সময় জাবেদ নাছিমের খোঁজ পাই। পরে তিনি এবং তার ভাগিনা ১৬৯তম রক্তদান করেন।
নতুন প্রজন্মের কাছে জাবেদ নাছিম দাদু হিসেবে পরিচিত। নতুন প্রজন্মের অনেকেই তাকে দাদু বলে সম্বোধন করেন। এ প্রজন্মের পরামর্শও দিলেন তিনি। মানুষের জন্য কাজ করার মতো মহৎ কিছু পৃথিবীতে আর নেই! তরুণ প্রজন্মকে রক্তদানে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। যেকোনো ধরনের খারাপ নেশা থেকে বিরত থাকতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সামাজিক ও মানবিক কাজগুলো করার পরামর্শও দিলেন তিনি।
Apr 06, 2020 ০
Apr 06, 2020 ০
Apr 06, 2020 ০
Apr 06, 2020 ০
Apr 06, 2020 ০
কিশোরগঞ্জের ছেলেকে পেতে ছুটে এলো ফিলিপাইনের মেয়ে
Jul 16, 2019 ০
তালাক পেয়ে খুশিতে দুধ দিয়ে গোসল করলেন স্বামী!
Jul 16, 2019 ০
এখনো আদিম!
Jul 15, 2019 ০
আজকের জোকস : স্বামীকে লাখপতি বানিয়েছি
Jun 15, 2019 ০
সিদ্দিকের এক খিলি পানের দাম ১০৫০ টাকা!
Jun 13, 2019 ০
Apr 06, 2020
Apr 06, 2020
Apr 06, 2020
Apr 05, 2020
Apr 05, 2020
May 19, 2018
May 08, 2018
Nov 25, 2018
Jul 10, 2018
Jul 06, 2018
Jul 29, 2018