-
জনপ্রতিনিধি
- সংসদ সদস্য
-
জেলা পরিষদ
- চেয়ারম্যান
- জেলার সাংবাদিক
- চাকরীর খবর
- প্রিয় মুখ
- রাশিফল
Feb 05, 2020 সম্পাদনা- সোহেল রেজা আলোচিত নেত্রকোনা, নেত্রকোনার প্রিয় মুখ, নেত্রকোনা, নেত্রকোনা, সারাদেশ
মোঃ আলী আমজাদ:
ডাঃ এম.এ.হামিদ খান। ১৯৩৩ সালের ১ মার্চ বাবা আলী নেওয়াজ খানের মুখে হাসি ফুটিয়ে, মা জাহেদা খাতুনের কোল উজ্জ্বল করে পূর্বধলা উপজেলার মাথাং গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তখন প্রত্যান্ত গ্রাম অঞ্চলে শিক্ষার কোন পরিবেশ ছিল না বললেই চলে। এহেন অবস্থায় শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে তিনি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫২ সালে তিনি মেডিকেলে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তখন তিনি সরাসরি ভাষা আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন। তৎসময় পাকিস্তান সরকার তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেন। তিনি চলে আসেন নেত্রকোণায় এবং ছাত্র আন্দোলনকে বেগবান করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। সে অনেক কথা। পরবর্তী সময় তিনি এম.বি.এস পাশ করে সরকারি চাকুরীর কোন চেষ্ঠাই করেননি। তিনি নেত্রকোণা শহরের কলেজ রোড সাতপাই বাসা করেন এবং আমৃত্যু নেত্রকোণার মানুষদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যান।
১৯৭১ সাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আহ্বানে সারা বাংলাদেশে প্রচন্ড মুক্তিযুদ্ধ চলতেছিলো। এই সময়টিতে ডাঃ এম. এ. হামিদ খান গোপনে মুক্তিযুদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন এবং মুক্তিযুদ্ধাদের উৎসাহ বর্ধনে বিশেষ সহায়কের ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তী দীর্ঘ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃৃক্ত করেন। নেত্রকোণা এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উনার ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। তিনি ডায়েবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, শহর সমাজসেবা কার্যালয়, নেত্রকোণা কর্তৃক পরিচালিত সমন্বয় পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও নেত্রকোণা জেলা প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্যসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তার নিষ্ঠা ও সততা সর্বজনন স্বীকৃত । এই নেত্রকোণা শহরে ছোট বড়, শিক্ষিত অশিক্ষিত সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে তার ছিল মধুর সম্পর্ক। শোকে-দুঃখে ভালো-মন্দে সবাই স্মরণাপণ্য হতেন এই প্রবীণ ডাক্তার এম. এ. হামিদ খানের কাছে। তিনি সবাইকে সৎ পরামর্শ দিতেন। কোনো সভা সেমিনারে আমাকে পেয়ে তিনি খুব খুশি হতেন। বলতেন আমজাদ তুমি একবার আমার বাসায় আসো। “সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডে তিনি আমাকে উৎসাহ উদ্দীপনা দিতেন। তিনি যে এতো তাড়াতাড়ি আমাদের ছেড়ে চলেন যাবেন ভাবতে পারিনি। ”গত ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ অপত্যাশিতভাবে তিনি ও চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জনাব আব্দুল ওয়াহেদ সাহেবকে নিয়ে আমার বাসায় আসেন। অল্প সময়ের মধ্যে অনেক কথা হলো। ২৫ জানুয়ারি, ২০২০ সকালে উনার মৃত্যু সংবাদ শুনলাম। চেম্বারে এসে বসলাম। অনেকেই বলাবলি করতেছিলো ডাক্তার হামিদ সাব মারা গেছেন। আমার খুব কষ্ট হইতেছিলো। নেত্রকোণা স্টেডিয়াম মাঠে উপস্থিত হলাম। দেখলাম সাদা কাফনের কাপড়ে পেছানো মরদেহ। খুব শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছেন। আজ আর হাস্যউজ্জ্বল মুখে বলেননি, “আমজাদ, তুমি কেমন আছো?” মরদেহ সামনে রেখে জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম সাহেব, এস.পি মো: আলী আকবর মুন্সী সাহেব, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিউর রহমান খান, পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল ওয়াহেদ সাহেব ও ছায়েদুর রহমান সাহেবসহ অনেকেই ভারাক্রান্ত হৃদয়ে কথা বলেন। সারা মাঠ পিন পতন নিরবতা।
এবার আপন আলয়ে যাবার পালা। মরদেহ গাড়িতে উঠানো হলো। শহরের গলি পেরিয়ে হিরণপুরের দক্ষিণ দিকের পাকা রাস্তা দিয়ে ধীরে ধীরে গাড়ি চলছে। মাথাং নিজ গ্রামে মরদেহ পৌঁছা মাত্রই এলাকার হাজার হাজার মানুষ তাকে শেষ বিদায় জানাতে দন্ডায়মান। দ্বিতীয় জানাজা শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন মা-বাবার কবরের পাশে এই জগত সংসার এমনই। তিনি এক ছেলে সন্তান ও তিন কন্যা সন্তানের জনক। আমাদের চারপাশে কতো স্নেহ-প্রীতি, মায়া-মমতায়ঘেরা কিন্তু আমাদের বুঝে আসেনা, আমাদের চারপাশ প্রয়োজনে কতো নিষ্ঠুর আর নির্দয় হতে পারে। একদিন আমাদেরকে চিরবিদায় নিতে হবে। সেদিন পথ-ঘাট, রাস্তা-রেস্তুরায় মানুষের আগমনের কমতি হবেনা। শুধু পড়বে না মোদের পদচিহ্ন। নিয়তি আর মৃত্যুর কাছে আমরা সবাই অসহায়। ডাঃ আব্দুল হামিদ খান আজ আমাদের মাঝে নেই। আমরা তাঁর জন্য কি বা করতে পারি? সবশেষে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি এই মহান ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ যেন জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অর্পিত করেন।
“আমিন”।
“লেখক- সম্পাদক, সাপ্তাহিক কৃষকের বাণী, নেত্রকোণা
কার্যকরী সভাপতি, নেত্রকোনা অনলাইন রিপোর্টার্স ক্লাব”
Apr 06, 2020 ০
Apr 06, 2020 ০
Apr 06, 2020 ০
Apr 06, 2020 ০
Apr 06, 2020 ০
নেত্রকোনার পূর্বধলায় করোনার লক্ষণ নিয়ে এক গৃহিনীর...
Apr 05, 2020 ০
নেত্রকোনার শহর জুড়ে পুলিশের সচেতনামূলক মহড়া
Apr 04, 2020 ০
Apr 06, 2020
Apr 06, 2020
Apr 06, 2020
Apr 05, 2020
Apr 05, 2020
May 19, 2018
May 08, 2018
Nov 25, 2018
Jul 10, 2018
Jul 06, 2018
Jul 29, 2018