Apr 22, 2020 সম্পাদনা- সোহেল রেজা কলাম, শীর্ষ সংবাদ এক
ডেস্ক: বিংশ শতাব্দীতে মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ধর্ম। ধর্মে আছে প্রত্যকে প্রানীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। মৃত্যু যতই নির্মম হোক না কেন মেনে নেওয়া ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। মৃত্যুর সময় সবাই চায় প্রিয়জনের সানিধ্য পেতে।
কপালে সুখকর শেষ স্পর্শ। চোখের কোণে গড়িয়ে পড়া একবিন্দু অশ্রু। বিদায় বেলায় এটিই পরম প্রত্যাশা।
কিন্তু মৃত্যুর সময় যদি কাউকে পাশে না পাওয়া যায় অসহায়ের মত আর্তনাদ ও একাকীত্ব নিয়ে সবাইকে ছেড়ে চলে যাওয়া যে কত কষ্টকর সেটা করোনায় আক্রান্ত রোগিদের সেবারত ডাক্তার ও নার্স ছাড়া আর কে উপলব্ধি করতে পারে!
একজন ডাক্তারের পাশাপাশি হাসপাতালে মৃত্যু পথযাত্রী রোগীকে রাতদিন সেবা করে সুস্থ করে তোলেন নার্সরা।
কিন্তু রোগী সুস্থ হলে দিন শেষে তার পুরো কৃতিত্ব পান ডাক্তার। সত্যি নার্সদের কথা কারো মনেই থাকে না। মেনে নিলাম। সবার ধারনা হয়তোবা নার্স তো তেমন কিছুই জানে না। সে তো ‘সামান্য একজন নার্স’। তিক্ত কথা সইতে না পেরে সম্প্রতি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসাপাতালের এক নার্স ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই নার্সের নাম আব্দুল্লাহ আল কাফী। প্রায় ৬ বছর ধরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সিনিয়র নার্স হিসেবে কর্মরত আছেন।
আমি সেই ‘সামান্য একজন নার্স’। প্রতিদিন সকালে সাধারণ নার্সের পোশাকটি গায়ে পরে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ছুটে চলি। প্রতিদিনের মত আজও আমি হাসপাতালের উদ্দেশ্য বের হই। খিলখেত বাসস্টপেজে দাড়িয়ে আছি। হঠাত সেখানে এক প্রতিবেশীর সাথে দেখা। আমাকে দেখে চমকে উঠলেন। তিনি বললেন, আমাকে কোনদিন এই নার্সের পোশাকে দেখেননি। আমি যে একজন নার্স তিনি সেটি জানতেন না।
তাই আজ আমাকে নার্সের পোশাকে দেখে বুঝতে পারলেন আমি সামান্য একজন নার্স। আজ প্রায় ৬ বছর ধরে চাকরি করছি। ‘নার্স’ শব্দটি আমি অনেকবার শুনেছি। আজকের শব্দটা শুনে আমার হৃদয়টা মোচড় দিয়ে উঠলো। আজকে জানতে পারলাম এর অন্যরকম ব্যাখ্যা।
আইসিউতে মৃত্যু পথযাত্রী আমার হাত ধরে পৃথিবীর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। আমি তার ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ না করে তাকে পরিস্কার পরিছন্ন করি। তারপর সম্মানের সাথে পরিবারের হাতে তুলে দেই।
আমি সন্তান হারানো বাবাকে শান্তনা দেই। গর্ভধারিনী মা আমার বুকে মাথা রেখে অশ্রু ফেলে। আমি তার শরীরে হাত বুলিয়ে কিছুক্ষণের জন্য হলেও তার কষ্ট ভোলাতে সাহায্য করি।
আমি রোগীর সিপিআর (কার্ডিওপুলমোনারী রিসেসসিটেশন) করে তার জীবন ফিরিয়ে আনি। নতুন করে তাকে বাঁচার স্বপ্ন দেখাই।
আমি একজন নবজাতকের বুকে কান দিয়ে তার ফুসফুসের শব্দ শুনতে পাই। তার কোন অঙ্গের অবস্থা কেমন আছে তা জানতে পারি। তা জেনে তার পরিচর্যা শুরু করি।
আমি রোগী, পরিচর্যাকারী ও জুনিয়র নার্সদের প্রশিক্ষণ দিতে পারি। একজন রোগীর স্বাস্থ্য পরিচর্যার ক্ষেত্রে আমি তার উকিলের কাজ করি। আমার কাছে সবার আগে গুরুত্ব পায় আমার রোগীর সুস্থতা। রোগীকে সুস্থ করার জন্য আমি ডাক্তারের সাথে যুদ্ধ করি।
আপনাদের বাবা-মা ও আদরের সন্তানের সেবা করতে গিয়ে নিজের পরিবারের সাথে ঈদের মতো আনন্দময়তা দিনও উৎযাপন করতে পারি না।
আমরা নার্সরা রোগীর শরীরে রক্ত দিতে পারি। রক্ত চেকআপ করতে পারি। ছোটখাটো কাটাছেঁড়াও করতে পারি। ক্ষত স্থান সেলাই করতে পারি।
আমার এবং আমাদের এতদিনের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের জন্য প্রতিদিন শত শত পরিবার ফিরে পায় তার আপনজন।
প্রতিদিন জরুরী রোগীদের সেবার করার জন্য দুপুরের খাবার সময় মত খেতে পারি না।
এতকিছুর পরও যদি আমি সামান্য একজন নার্সই হই তাহলে হাস্যকরভাবে আমি খুবই গর্বিত। আমি গর্বিত এই ভেবে যে আমি সেই ‘ সামান্য একজন নার্স’।
আমি এখন করোনা রোগীদের সেবা দিচ্ছি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
আব্দুল্লাহ আল কাফী
সিনিয়র স্টাফ নার্স, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল
May 24, 2020 ০
May 24, 2020 ০
May 24, 2020 ০
May 24, 2020 ০
May 24, 2020 ০
করোনায় মারা গেল পুলিশের আরেক সদস্য
May 24, 2020 ০
এক লাফে বেড়ে গেল ব্রয়লার মুরগীর দাম!
May 24, 2020 ০
মুসলিমদের ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন ট্রাম্প
May 24, 2020 ০
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মঞ্জুর এলাহী ও...
May 24, 2020 ০
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আ’লীগ নেতার মৃত্যু
May 24, 2020 ০
May 24, 2020
May 24, 2020
May 24, 2020
May 24, 2020
May 24, 2020
May 24, 2020
May 24, 2020
May 24, 2020
May 24, 2020
May 24, 2020
May 19, 2018
May 08, 2018
Nov 25, 2018
Jul 10, 2018
Jul 06, 2018
Jul 29, 2018