Jun 21, 2020 সম্পাদনা- সোহেল রেজা আলোচিত নেত্রকোনা, নেত্রকোনা, নেত্রকোনা, নেত্রকোনা সদর, সারাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক, নেত্রকোনার আলো ডটকম:
নেত্রকোনায় আলহাজ ওসমান আলী রহ: মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা, দোয়া ও দুস্থ:দের মাঝে সহযোগীতা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রোববার (২১ জুন) সকাল ১১টায় নেত্রকোনা অনলাইন রিপোর্টার্স ক্লাবের বারহাট্টা রোড কার্যালয়ে এ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
অভিজিৎ শান্ত এর সঞ্চালনায় ও নেত্রকোনা অনলাইন রিপোর্টাস ক্লাবের সভাপতি কামরুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে নেত্রকোনা অনলাইন রিপোর্টাস ক্লাবের কার্যকরি সভাপতি আলী আমজাদ।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নেত্রকোনা অনলাইন রিপোর্টাস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রেজা, সাংবাদিক একে এম এরশাদুল হক জনি, আবুল কালাম আজাদ, মুহা. জহিরুল ইসলাম অসীম, ইউনুস খান, নুরুল হুদা সহ অনেকেই।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আলহাজ ওসমান আলী (রহ.)— শুধু একটি নাম নয়। একটি প্রতিষ্ঠান। একটি ইতিহাস। একাধারে তিনি ছিলেন ভাষাসৈনিক, শিক্ষাবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, সমাজসেক, বহু দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক। সর্বোপরি তিনি ছিলেন সমাজের উদাহরণতুল্য ব্যক্তিত্ব। অনুসরণীয় মানুষ। সাধারণ শিক্ষার সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত দ্বীনদার ও আল্লাহওয়ালা মানুষ। নির্লোভ ও নিরহঙ্কার। ইহকালের তুলনায় পরকাল ছিল তার জীবনে অধিক প্রাধান্যিত্ব।
উল্লেখ্য, ১৯২৭ সালের ২৯ এপ্রিল শুক্রবার নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানার মন্ডলেরগাতী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ওসমান আলী। তার বাবা নাম মাহমুদ জান তালুকদার ও মায়ের নাম আয়েশা খাতুন। ১৯৩৪ সালে ৭ বছর বয়সে নিজ গ্রামের মক্তবে ভর্তি হন তিনি। ১৯৩৪-৩৬ পর্যন্ত সেখানে পবিত্র কোরআন শিক্ষা করেন। এরপর ১৯৩৭ সালে ভর্তি হন পার্শ্ববর্তী বড়কাপন গ্রামে প্রাইমারি স্কুলে। ১৯৪০ সালে এ স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেণীতে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৪১ সালে ভর্তি হন রানীগাঁও মিডিয়া ইংলিশ স্কুলে ৫ম শ্রেণীতে। সেখান থেকে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণী পড়াশোনা করে ১৯৪৩ সালে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন দুর্গাপুর থানার বিরিশিরি মিশন স্কুলে এবং অষ্টম শ্রেণী পাস করে ১৯৪৫ সালে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন বারহাট্টা থানার ভাউমী হাইস্কুলে। নবম ও দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে ১৯৪৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ম্যাট্রিক পাস করেন। অতঃপর ভর্তি হন কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল কলেজে। ১৯৫১ সালে এ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। বিএ ক্লাসে অধ্যয়নকালে কিছু দিন তিনি কলমাকান্দা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন।
বিএ পাস করার পর দুর্গাপুর থানার কালসিন্দুর হাইস্কুলে যোগদান করার মাধ্যমে শুরু হয় ওসমান আলীর কর্মজীবন। সেখানে বছরখানেক শিক্ষকতা করেন। এ সময় পূর্বধলা থানার দুধী গ্রামের মরহুম জাহেদ আলীর মেয়ে মোসাম্মৎ জাবেদা বেগমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি নিয়ে ভর্তি হন এবং ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালে সেখান থেকে এমএ পাস করেন। অবশ্য পড়াশোনার পাশাপাশি প্রায় দেড় বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আপার ডিভিশন ক্লার্ক (টউঅ) পদে চাকরিও করেন। এমএ পাস করার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ১৯৫৫ সালে সাবরেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ পান সিলেটের বিয়ানীবাজারে। ১৯৫৫ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন স্থানে সাবরেজিস্ট্রার পদে চাকরি করেন। ১৯৮১ থেকে ৮৭ সাল পর্যন্ত উজ বা জেলা রেজিস্ট্রার পদে চাকরি করে অবসর গ্রহণ করেন।
সুফি ওসমান আলী (রহ.) শিক্ষকতা, সাবরেজিস্ট্রার, জেলা রেজিস্ট্রার পদে চাকরি করলেও তার জীবন ছিল সামগ্রিক মূল্যায়নে উজ্জ্বল। ৩২ বছর সাবরেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকরি করলেও তিনি কোনোদিন এক পয়সা ঘুষ গ্রহণ করেননি। ইসলামের প্রতিটি নীতি ও আমলকে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করে বাস্তব জীবনে যথাযথভাবে পালন করতেন তা।
১৯৬২ সালে ছারছীনা শরিফের মরহুম পীর সাহেব আবু জাফর মোহাম্মদ ছালেহ (রহ.)-এর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন। এখানে সূচনা ঘটেনি তার আধ্যাত্মবাদ চর্চা; এর আগে থেকেই একজন কামেল অলি ছিলেন শাহ সূফি ওসমান আলী।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষের জন্য আদর্শ ও কল্যাণের অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন ওসমান আলী। গোটা জীবনটাকে বিলিয়ে দিয়েছেন মানবতা কল্যাণে। দ্বীন ইসলামের খেদমতে। ১৩টি মসজিদ ও ৫টি মাদরাসাসহ বহু স্কুল-কলেজে অনুদান দিয়েছেন এবং সথাযোগ্য সাহায্য করেছেন। একক প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন বেশ কয়েকটি মসজিদ ও মাদরাসা। প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেকেই এমন মন্তব্য করেছেন ‘এমন মানুষ মিলবে না আর এধরাতে।’
ওসমান আলী (রহ.) ছিলেন ব্যক্তিজীবন, পারিবারিকজীবন ও সমাজজীবনে অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। সংসারজীবনে তিনি ছিলেন ১১ সন্তানের জনক। মহান প্রভুর রহমত ও বরকতে এবং তার ঐকান্তিক চেষ্ঠায় তার সব সন্তান এবং জামাতারা একই সঙ্গে দ্বীনদার, পরহেজগার, সামাজিক ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। ১৯৮৮ সালে একা এবং ২০০৫ সালে সস্ত্রীক পবিত্র হজব্রত পালন করেন ওসমান আলী। ২০১৪ সালের ২০ জুন জুমাবার রাত ১টায় অসংখ্য শুভাকাক্সক্ষী ও সৎ সন্তানদের রেখে বর্ণাঢ্য জীবনের ইতি টানেন ওমসান আলী। মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে পাড়ি জমান পরকালীন জগতে।
Jun 24, 2020 ০
Jun 24, 2020 ০
Jun 24, 2020 ০
Jun 24, 2020 ০
Jun 24, 2020 ০
নেত্রকোনায় বখাটেদের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়াই...
Jun 22, 2020 ০
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পৌর এলাকায় মন্দিরে দেবীর...
Jun 21, 2020 ০
সাংবাদিক লিটন ধর গুপ্তর মৃত্যুতে সমাজ কল্যান...
Jun 14, 2020 ০
নেত্রকোনায় এক মহিলার অস্বাভাবিক আচরণে ক্ষুব্ধ...
Jun 04, 2020 ০
Jun 24, 2020
Jun 24, 2020
Jun 24, 2020
Jun 24, 2020
Jun 24, 2020
May 19, 2018
May 08, 2018
Nov 25, 2018
Jul 10, 2018
Jul 06, 2018
Jul 29, 2018