শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন

অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছে না ক্রয় কমিটি

অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প অনুমোদন দিচ্ছে না ক্রয় কমিটি

অনলাইন ডেস্ক, নেত্রকোণার আলো ডটকম:

রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়ে অনেকটাই হিসাবি বর্তমান সরকার। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এক সভায় অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বৃহৎ প্রকল্পগুলোর অর্থ ছাড় দেখেশুনে করা হবে। জীবন-জীবিকা ও ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত কেনাকাটাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

সরকার গঠনের পর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি যে কয়টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে তাতে সিদ্ধান্তের প্রতিফলন দেখা গেছে। সভাগুলোতে জ্বালানি, সার ও সার কারখানার কাঁচামাল, চাল, গম আমদানি এবং টিসিবি’র জন্য স্থানীয়ভাবে মসুরির ডাল ও সয়াবিন ক্রয়ের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শুধু দেশের কৃষি ও শিল্প খাতের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ও দ্রুত প্রয়োজন মেটানোর ক্রয় প্রস্তাবই এখন থেকে অনুমোদন দেওয়া হবে। অপ্রয়োজনীয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ কেনাকাটার প্রস্তাব বাদ দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে জানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য আমদানি করা সার গুদামজাত করার জন্য দেশের দুই জায়গায় দুটি বাফার গুদাম নির্মাণ প্রস্তাব পর পর দুটি সভায় উত্থাপন করা হলেও দু’বারই তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এই দুটি বাফার গুদামের জন্য নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনায় দুটি বাফার গুদাম নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। দুটি গুদামের মোট আয়তন ধরা হয় ৪৬ হাজার ৬২৫ বর্গমিটার এবং মোট সার ধারণ ক্ষমতা ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ময়মনসিংহের গুদামের ধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার মেট্রিক টন এবং নেত্রকোনার গুদামের ধারণ ক্ষমতা ১০ হাজার মেট্রিক টন।

বিসিআইসি সূত্রে জানা যায়, গুদাম দুটি নির্মাণে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের বিষয়টি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য গত বুধবার উত্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে, আপাতত এই প্রকল্পের কোনো প্রয়োজন নেই। ঠিকাদার নিয়োগের বিষয়টি নিয়েও সভায় আপত্তি প্রকাশ করা হয়। ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতামূলক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, গুদাম দুটি নির্মাণে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ৭টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দরপত্র ক্রয় করে। কিন্তু দরপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যৌথভাবে মাত্র একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান (এনডিই-এসি) দরপত্রে অংশ নেয়। দরপত্রে উল্লেখিত প্রস্তাব অনুযায়ী, গুদাম দুটি নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ১১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

দেশে কৃষি সারের সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিসিআইসি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। আগামী বছরের জুন নাগাদ প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পরবর্তীতে গত বছরের এপ্রিলে প্রকল্পটির ১ম সংশোধিত প্রস্তাব একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই সময় প্রকল্পের সর্বশেষ মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা।

( নেত্রকোণার আলো ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। )

Comments are closed.




© All rights reserved © 2024 www.netrakon-r-alo.com