শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, নেত্রকোণার আলো ডটকম:
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে তালা দিয়ে এক শিক্ষককে আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা। প্রায় দুই ঘন্টা পরে সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে ওই শিক্ষককে তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে উদ্ধার করে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
এঘটনাটি বৃহস্পতিবার ( ১৯ সেপ্টেম্বর) জেলার প্রথম স্থাপিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দুয়া উপজেলা সদরের জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক, উপজেলা প্রশাসন,অভিবাবক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবির আহমেদ চৌধুরী ও সিনিয়র শিক্ষক হারুন অর রশিদদের বিরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের যৌনহয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠে। তাদের বদলীর দাবীতে গত ২৫ আগস্ট শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় ইউএনও ইমদাদুল হক তালুকদার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন পাঠান।
এদিকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকে সপ্তাহে এক দিন স্কুলে গিয়ে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের মৌখিক নির্দেশনা দেন। প্রধান শিক্ষক নির্দেশনা মেনে চললেও সিনিয়র সহকারি শিক্ষক হারুন অর রশিদ অমান্য করে প্রায়শই স্কুলের অভ্যন্তরে যেতেন। এনিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। ওই বিষয়টি ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গত রবিবার জেলা প্রশাসককে লিখিত ভাবে অবহিত করেন। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদ স্কুলে গেলে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখে প্রায় দুই ঘন্টা। খবর পেয়ে বেলা ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে তাকে মুক্ত করেন এবং তাকে মদন সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ফরিদা আক্তার জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রমাণ পাওয়ায় তাদেরকে বিদ্যালয়ে আসতে বারণ করেছিল ইউএনও স্যার, কিন্তু হারুন সাহেব স্যারের নির্দেশনা অমান্য করে বিদ্যালয়ে আসতেন আর তাতে ছাত্ররা ক্ষেপে উঠত। অন্যদিন ছাত্রদের থামাতে পারলেও আজকে আমাদেরসহ রুমে আটকে দেয় ছাত্ররা। পরে আমাদের চারজন শিক্ষকে বের হতে দিলেও হারুন সাহেবকে প্রায় দুঘণ্টা আটকে রাখে। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে মদন সেনা ক্যাম্পে নিয়ে গেছেন।
ইউএনও ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, যেহেতু তাদের বিরুদ্ধ অভিযোগের সত্যতা পাই এবং শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতি চরম ক্ষুব্ধ তাই কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেই লক্ষে তারা দুইজনকে বিদ্যালয়ে কয়েকদিন না আসাতে বলেছিলাম। এরপরেও হারুন সাহেব প্রায় সময় বিদ্যালয়ে এসে পড়তেন এবং নানা কথা ছড়াতেন। এনিয়ে ছাত্ররা উত্তেজিত ছিল এবং বৃহস্পতিবার স্কুলে আসলে তাকে অফিস কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে তাকে উদ্ধার করেছেন। এত
তিনি আরো বলেন, অভিযোগ প্রমাণ হওয়া উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে তাদের বিরুদ্ধ বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ অন্যত্রে বদলীর সুপারিশ করা হয়েছে।