রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৫৩ অপরাহ্ন

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ধার দিতে রাজি ১০ ব্যাংক

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ধার দিতে রাজি ১০ ব্যাংক

অর্থনীতি ডেস্ক, নেত্রকোণার আলো ডটকম:
আর্থিক অনিয়মে দুর্বল হ‌য়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে অর্থ ধার দি‌তে রা‌জি হ‌য়ে‌ছে অতিরিক্ত তারল্য থাকা সবল ১০ ব্যাংক। এসব ব্যাংকের ঋণে গ্যারান্টি বা নিশ্চয়তা দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গতকাল (বুধবার) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে এক বৈঠ‌কে এমন সিদ্ধান্ত হ‌য়ে‌ছে।

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত তারল্য থাকা যে ১০ ব্যাংক ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে, এর ম‌ধ্যে আছে রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব‌্যাংক, বেসরকা‌রি খা‌তের ব্র্যাক, ইস্টার্ন, দ্য সিটি, শাহ্‌জালাল ইসলামী, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, পূবালী, ঢাকা, ডাচ্‌–বাংলা এবং ব্যাংক এশিয়া।

গভর্নরের সঙ্গে বৈঠ‌কে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠ‌কের বিষয়ে বাংলা‌দেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা সাংবাদিকদের জানান, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে দেওয়া ঋণের টাকা ফেরত চাইলে সবল ব্যাংকগুলোকে তিন দিনের মধ্যেই তা ফেরত দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো ব্যাংক ঋণ দেওয়ার জন্য কোনো টাকা নিতে পারবে না। কোন ব্যাংককে কত টাকার তারল্য–সহায়তা দেওয়া হবে, সেটি নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া দুই ব্যাংকের সমঝোতার ভিত্তিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হবে।

এদিকে তারল্য–সহায়তা পেতে পাঁচটি ব্যাংক ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। এগুলো হচ্ছে— বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। আরও দুটি ব্যাংক চুক্তিবদ্ধ হওয়ার অপেক্ষায় আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টির মানে হলো, কোনো কারণে কোনো ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই টাকা দেবে। আপাতত কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি টাকা না দিয়ে অন্য ব্যাংক থেকে ধারের ব্যবস্থা করছে। অর্থাৎ বাজারের টাকা এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে যাবে। ফলে মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি প্রভাব পড়বে না।

সংকটে পড়া সাত ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকার তারল্য-সহায়তা চেয়েছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক ৫ হাজার কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৭ হাজার ৯০০ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ২ হাজার কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংক ১ হাজার ৫০০ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক সাড়ে ৩ হাজার কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক ৫ হাজার কোটি ও এক্সিম ব্যাংক ৪ হাজার কোটি টাকা সহায়তা চেয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংক ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় আটটি ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল এস আলম গ্রুপ। এগুলো হলো, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। এছাড়া, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকেরও নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল তারা। এই ৮টি ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে। তবে এর ম‌ধ্যে ৬টি ব্যাংকের পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তাদের অনেক শাখায় লেনদেন করার মতো নগদ টাকা নেই। আমানতকারীদের চাপে প‌ড়ে‌ছেন শাখা কর্মকর্তারা।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করা হয়। এর মধ্যে এস আল‌মের নিয়ন্ত্রণে থাকা আটটিসহ মোট ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন করে পুনর্গঠন করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পর্ষদ পুনর্গঠন করা অন্য তিন ব্যাংক হলো— আইএফআইসি, ইউসিবি ও এক্সিম ব্যাংক।

( নেত্রকোণার আলো ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। )

Comments are closed.




© All rights reserved © 2024 www.netrakon-r-alo.com