শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেত্রকোণার আলো ডটকম:
সম্প্রতি ইসরাইলের পার্লামেন্ট (নেসেট) একটি বিতর্কিত আইন পাশ করেছে, যা ফিলিস্তিনি বন্দিদের নির্বাসনের অনুমতি দেয় এবং শিশুদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থার বিধান করে। এই আইনটি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলি শাসনের কঠোর ও বর্ণবাদী নীতির প্রতিফলন হিসেবে সমালোচিত হচ্ছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এই আইনকে “বর্ণবাদী আচরণের আরেকটি প্রমাণ” বলে অভিহিত করেছে এবং আন্তর্জাতিক আইন ও শিশু অধিকার চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে।
এই আইনে এমন বন্দিদের নির্বাসনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে শহিদি হওয়ার উদ্দেশে আক্রমণ চালানোর অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া, এতে ফিলিস্তিনি পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। নতুন আইনে ১৪ বছরের কম বয়সি ফিলিস্তিনি শিশুদেরও বিচারের আওতায় এনে কারাগারে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আইন জাতিসংঘের শিশু অধিকার চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও চুক্তির সুস্পষ্ট অবজ্ঞা। শিশু অধিকার চুক্তি অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সি শিশুদের নিরাপত্তা, শিক্ষা, এবং উন্নতির অধিকার সুরক্ষিত। কিন্তু ইসরাইলি আইন ফিলিস্তিনি শিশুদের প্রতি সহিংসতার মাধ্যমে এই অধিকারগুলোকে উপেক্ষা করছে। ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মী এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই পদক্ষেপের কারণে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে।
হামাস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ, এবং শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন ইসরাইলের এই নতুন আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানায় এবং এই আইন বাতিলের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। বিশেষ করে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের অধিকার সুরক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং শিশুদের বিরুদ্ধে এই কঠোর ব্যবস্থা বন্ধ করতে তারা জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।
হামাসের বিবৃতিতে গাজার নিরপরাধ জনগণের ওপর চালানো ইসরাইলি বাহিনীর সহিংসতা এবং হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানানো হয়েছে। গাজায় নির্বিচারে চালানো হামলা ও দমনপীড়ন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। হামাস বলেছে, “গাজার জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ প্রয়োগের এখনই সময়।”
ইসরাইলের এই নতুন আইনের কারণে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। ফিলিস্তিনি জনগণ এটিকে তাদের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামকে আরও কঠিন করার একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। ইসরাইলি আইনটির ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া আশা করা হচ্ছে, এবং এটি শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইসরাইলের এই আইন এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে চলমান দমন-পীড়নকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে।