শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৯ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, নেত্রকোণার আলো ডটকম:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাতারের উপর হামাসের কার্যালয় সরানোর জন্য চাপ বৃদ্ধি সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। হামাসের রাজনৈতিক ও লজিস্টিক কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে কাতারের রাজধানী দোহা থেকে পরিচালিত হচ্ছে, যা গাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাধানের প্রয়াসেও সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। তবে বর্তমানে ইসরাইলের সঙ্গে হামাসের সংঘর্ষ এবং গাজা সংকট নতুন করে কাতারের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।
কাতারের যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যা তাকে এই অঞ্চলে একটি কৌশলগত মিত্র হিসেবে গড়ে তুলেছে। একইসঙ্গে কাতার দীর্ঘদিন ধরে হামাসসহ ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যা তার স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। ফলে কাতারের উপর এই চাপ তার জন্য জটিল কূটনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে সাড়া দিলে কাতারকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী অবস্থান নিতে হবে যা আংশিকভাবে হামাসের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
মার্কিন কর্মকর্তারা বারবার উল্লেখ করেছেন যে, দোহায় হামাসের কার্যক্রম ‘অগ্রহণযোগ্য’ হয়ে উঠেছে, বিশেষত ইসরাইলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে আক্রমণের পর। তারা মনে করেন, কাতারের হামাসকে সমর্থন ও আশ্রয় দেয়া মার্কিন ও ইসরাইলি স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং এটি সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে। এজন্য তারা কাতারকে আহ্বান জানিয়েছে হামাসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার ও তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য।
কাতার এখন এমন এক জটিল পরিস্থিতিতে আছে যেখানে তাকে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশের সঙ্গে কৌশলগত মিত্রতা বজায় রাখা এবং অন্যদিকে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি ঐতিহ্যগত সমর্থন। হামাসকে সরানোর ব্যাপারে কাতার হয়তো একটি মধ্যমপন্থা গ্রহণ করতে পারে, যেমন হামাসের কার্যালয়ের কার্যক্রম সীমিত করা বা আঞ্চলিকভাবে কোনো নিরপেক্ষ স্থানে স্থানান্তরের প্রস্তাব রাখা।
হামাসের কার্যালয় সরানোর চাপ কাতারের পররাষ্ট্রনীতির জন্য শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক কৌশলগত প্রভাব ফেলতে পারে। এটি মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক পরিস্থিতিকে নতুন মাত্রায় উত্তপ্ত করতে পারে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। এছাড়া ফিলিস্তিনি ইস্যুতে কাতারের অবস্থান পরিবর্তন হলে তা অঞ্চলজুড়ে অন্য আরব দেশগুলোর নীতি এবং সম্পর্কেও প্রভাব ফেলবে।
বর্তমানে কাতারকে নিয়ে কূটনৈতিক মহলে অনেক আলোচনা হচ্ছে, তবে কাতার কীভাবে এই চাপ সামাল দেবে তা পরবর্তী সময়ে আঞ্চলিক রাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হবে।