শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৬ অপরাহ্ন
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক, নেত্রকোণার আলো ডটকম:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় কমপক্ষে আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলমান এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজা জুড়ে আরও কমপক্ষে ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি ক্যাফেতে বসে থাকা অবস্থায় লোকদের ওপর ড্রোন হামলার ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এর আগে এই এলাকাকে “নিরাপদ অঞ্চল” হিসাবে ঘোষণা করেছিল।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসের পশ্চিমে একটি ছোট তাঁবুর ক্যাফেতে ইসরায়েলি ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সোমবার গভীর রাতে ১০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। আল জাজিরার হানি মাহমুদ জানান, “এই হামলা প্রমাণ করে যে, ‘নিরাপদ এলাকা’ সম্পর্কে ইসরায়েলি দাবিগুলো কেবলই মিথ্যা বর্ণনা। লোকেরা ইন্টারনেট এবং বাইরের বিশ্বের সাথে যুক্ত হতে এই ক্যাফেতে যায়। রাত গভীরে ড্রোন থেকে ক্যাফেতে অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয় যখন ক্যাফেটি লোকজনে পূর্ণ ছিল।”
তিনি আরও জানান, হামলায় আহত সাতজনের অস্ত্রোপচার চলছে এবং খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা ভুক্তভোগীদের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। এর আগে, নুসেইরাতের আল-আওদা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেন, সোমবার ইসরায়েলি ট্যাংকের হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছেন।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শরণার্থী শিবিরে ট্যাংক হামলায় বাসিন্দারা অবাক হয়ে যায়। জাইক মোহাম্মদ নামে ২৫ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি বলেন, “কিছু লোক বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি এবং তারা ভেতরে আটকা পড়েছিল।”
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ অসংখ্য ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজায় তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, এবং গাজায় খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট চলছে।
এই হামলায় মৃতের সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬০৩ জনে পৌঁছেছে বলে অবরুদ্ধ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।