শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ১০:১১ পূর্বাহ্ন

ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিয়েছি-এই অপবাদ নিয়ে বাঁচার চেয়ে মরাই ভালো

ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিয়েছি-এই অপবাদ নিয়ে বাঁচার চেয়ে মরাই ভালো

নিজেস্ব প্রতিবেদক,  নেত্রকোণার আলো ডটকম: 
“৮ বছর আগে স্বামী মারা গেছে। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। “ইউপি সদস্যের ভাই বলে কথা, ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিয়েছি—এই অপবাদ নিয়ে বাঁচার চেয়ে মরাই ভালো”—কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমন মর্মস্পর্শী কথাগুলো বলছিলেন নেত্রকোণার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ফতেপুর গ্রামের ৫৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা নারী, যিনি সম্প্রতি ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগীর ভাষ্য অনুযায়ী, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই পাশের বাড়ির জমশেদ মিয়া (৪৮) তাকে নানাভাবে কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে, ছেলের অনুপস্থিতিতে জমশেদ মিয়া তার ছেলের পরিচয়ে দরজায় কড়া নাড়ে। দরজা খোলার পর সে ঘরে ঢুকে ভুক্তভোগীকে মারধর করে এবং ধর্ষণ করে। ঘটনার পর প্রাণনাশের হুমকি দিলে ভয়ে ও লজ্জায় তিনি প্রথমে কাউকে কিছু বলেননি।

পরে বিষয়টি জানাজানি হলে, গত ১১ মার্চ মদন থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। তবে তার ভাষ্যমতে, তিনি ধর্ষণের অভিযোগ করলেও থানায় মামলা হয়েছে ‘ধর্ষণ চেষ্টার’ ধারায়।

মামলা হওয়ার পরও অভিযুক্ত জমশেদ মিয়া প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও অভিযুক্তের ভাই বকুল মিয়া বিভিন্নভাবে হুমকি ও গালমন্দ করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। তিনি বলেন, “পুলিশ বা কেউ আসলেই আমার বাড়িতে এসে গালমন্দ করে, হুমকি দিয়ে যায়। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছি।”

স্থানীয় সূত্র জানায়, অভিযুক্ত জমশেদ মিয়া বর্তমান ইউপি সদস্য বকুল মিয়ার ভাই। তাদের আরেক ভাই হিরন মিয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা এলাকায় প্রভাবশালী এবং লাঠিয়াল প্রকৃতির হওয়ায় সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

সাম্প্রতিক সময়ে, ঘটনাস্থলে সাংবাদিকসহ স্থানীয়রা গেলে অভিযুক্তের স্ত্রী ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে। এ সময় ইউপি সদস্য বকুল মিয়া বলেন, “আমার ভাইয়ের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব মামলা কিছুই হবে না। এই মামলা কবেই খাইয়া ফেলছি। এই মহিলারে যে কোথায় নিবো, সে নিজেই জানে না।”

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, “ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা রজু করা হয়েছে। অভিযোগে ধর্ষণের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। আসামিকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।”

( নেত্রকোণার আলো ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। )

Comments are closed.




© All rights reserved © 2024 www.netrakon-r-alo.com