শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, মদন (নেত্রকোনা):
নেত্রকোনার মদনে বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব থেকে একটি ল্যাপটপ উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কম্পিউটার শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে দায়িত্বে অবহেলার জন্য শোকজ করেছেন এবং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১১ আগস্ট প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার, শিক্ষকবৃন্দ ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব পরিদর্শনে যান। গণনা করে দেখা যায়, ল্যাবে থাকা ১৭টি ল্যাপটপের মধ্যে ১টি ল্যাপটপ নেই। তাৎক্ষণিকভাবে কম্পিউটার শিক্ষক মনির হোসেন এবং অফিস সহায়ক শরীফ মিয়ার কাছে ল্যাবের চাবি থাকার কারণে তাদেরকে ল্যাপটপের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু তারা ল্যাপটপের বিষয়ে কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।
এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক বলেন, “ল্যাপটপটি খুঁজে না পাওয়ায় কম্পিউটার শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে শোকজ করেছি এবং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনে মামলা দায়ের করা হবে।”
অন্যদিকে, কম্পিউটার শিক্ষক মনির হোসেন জানান, ল্যাব রুমের চাবি আমার কাছে ছিল, কিন্তু প্রধান শিক্ষক অফিস সহায়ক শরীফকেও চাবি দিয়েছেন। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষককে আগেই সতর্ক করেছিলাম। এখন আমাকে শোকজ করা হয়েছে, যা ঠিক হয়নি।
অফিস সহায়ক শেখ মুহাম্মদ শরিফ বলেন, ল্যাপটপটি উধাও হওয়ার পর থেকেই আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আমার কাছে কোনো সময়েই ওই রুমের চাবি ছিল না।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ আমিরুল হাসান খোকন তালুকদার জানান, আমরা ল্যাব পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছি একটি ল্যাপটপ কম রয়েছে। প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেননি। এখন আমাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই থানায় জিডি করেছেন।
মদন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল বারী জানান, প্রধান শিক্ষক আমাকে বিষয়টি জানাননি। আমি তদন্ত করার জন্য একাডেমিক সুপারভাইজারকে দায়িত্ব দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ শাহ আলম মিয়া বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাদের অবগত না করেই জিডি করেছেন। আমরা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। দোষীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক জানান, এর আগেও একটি কম্পিউটার চুরি হয়ে গিয়েছিল, যা পরে এক শিক্ষকের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এখন আবারও এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব এড়াতে চান কিনা, সে ব্যাপারে প্রশ্ন উঠছে।
এই ঘটনায় বিদ্যালয় এবং স্থানীয় মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন সবাই।