বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, নেত্রকোণার আলো ডটকম:
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বিএনপি নেতার নাম ব্যবহার করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নবনির্মিত একটি ভবন দখলের অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) থেকে নতুন করে সরকারি জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা নূর হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হাসপাতালের পাশে সড়ক ও জনপদ বিভাগের ভবন ও আশপাশের জায়গা দখলের অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার পর থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে দখলমুক্ত করার জন্য মৌখিক এবং লিখিতভাবে জানানো হলেও বিএনপি নেতা নূর হোসেন মোল্লা সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে সরকারি জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণ করছেন।
জানা গেছে, গত ২২ আগস্ট সড়ক ও জনপদ বিভাগ থেকে নুর হোসেন মোল্লাকে সরকারি ভবন ও জায়গা দখলমুক্ত করার জন্য চিঠি দেওয়া হলেও কোনো ফল হয়নি। চিঠির অনুলিপি ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে, কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাঙ্গা-টেকেরহাট মহাসড়কের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও হাসপাতালের পাশের সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাইড অফিস হিসেবে নির্মিত ভবনটি প্রায় এক বছর আগে নির্মাণ শুরু হয়। ভবনটির কাজ শেষ পর্যায়ে থাকতেই ১৮ আগস্ট স্থানীয় বিএনপি নেতা নূর হোসেন মোল্লা ভবনটি দখল করেন এবং সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন। এরপর ভবনের একটি অংশ ভেঙে চারটি দোকানঘর নির্মাণ করেন। গত ১৮ অক্টোবর তিনি নতুন করে সরকারি আরও জায়গা দখল করে টিনের ঘর নির্মাণ শুরু করেন।
ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের অফিস সহকারী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় সাইড অফিস হিসেবে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু নূর হোসেন মোল্লা বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে ভবনটি দখল করেন এবং সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন। ভবনের কিছু অংশ ভেঙে দোকানঘর নির্মাণ করেন এবং নতুন করে টিনের ঘরও তৈরি করছেন। তাকে নিষেধ করা হয়েছে এবং চিঠিও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি কর্ণপাত করছেন না।”
স্থানীয়দের মতে, নূর হোসেন মোল্লা একজন ভূমিদস্যু। ভাঙ্গা থানার পেছনে এবং বাজারের আশেপাশে সরকারি জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি দীর্ঘদিন ধরে।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা নূর হোসেন মোল্লা বলেন, “ওই জায়গায় আমরা প্রায় ৬০ বছর ধরে দোকানঘর তুলে ভোগদখল করে আসছি। সড়ক ও জনপদ বিভাগের লোকজন আমার জমি দখল করে অফিস বানিয়েছে। জমি যেহেতু আমার, ভবনটিও আমার।”
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম বলেন, “নূর হোসেন মোল্লা উপজেলা বিএনপির সদস্য হলেও তার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এটি দলীয় কোনো বিষয় নয়, এটি তার ব্যক্তিগত এবং সরকারি বিষয়।”
ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কুদরত এ খোদা বলেন, “সড়ক ও জনপদ বিভাগের কোনো চিঠি এখনো পাইনি। তবে সরকারি ভবন ও জায়গা দখলকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের মাদারীপুর জোনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের জায়গার উপর একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। বিএনপি নেতা পরিচয়ে নুর হোসেন মোল্লা ভবনটি দখল করেন এবং সামনের অংশ ভেঙে দোকান তৈরি করেন। নতুন করে সরকারি জায়গা দখল করে টিনের ঘর নির্মাণ করছেন। এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”