বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, নেত্রকোণার আলো ডটকম:
জ্বালানি তেল সংকটের কারণে গত দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে নেত্রকোণার মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্স। অকটেনের বকেয়া পরিশোধ না করায় এই সেবা বন্ধ থাকায় রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তর করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অ্যাম্বুলেন্সটির জ্বালানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মোনাকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড বকেয়া ১৩ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা পাওনা থাকায় ২ আগস্ট থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে অসুস্থ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদরের নেত্রকোনা আধুনিক হাসপাতাল কিংবা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হলে দ্বিগুণ থেকে চার গুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মদন থেকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া ৬০০ টাকা, আর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ হাজার ৪৬০ টাকা। তবে, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ থাকায় প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া দিতে হচ্ছে যথাক্রমে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা এবং ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, যা অনেক রোগী ও তাদের পরিবারের জন্য বড় ধরনের আর্থিক চাপ তৈরি করছে।
এমতাবস্থায় মদন, খালিয়াজুরী এবং আটপাড়ার রোগীরা সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বাঘমারা গ্রামের বাসিন্দা ওয়াসিম মিয়া বলেন, “মা অসুস্থ, ময়মনসিংহ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ডাক্তার। কিন্তু সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ। প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স নিতে গেলে ৪ হাজার টাকা খরচ হবে। রোগীকে বাঁচাতে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হলেও দিতে হবে।”
অ্যাম্বুলেন্স চালক আবুল হুসাইন মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিনই রোগীর স্বজনেরা ফোন করে, কিন্তু তেল না থাকায় চালাতে পারছি না। দীর্ঘদিন ধরে অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ, কাজ না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছি।”
মোনাকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বকেয়া পরিশোধ না করায় মালিকের নির্দেশে তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।”
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূরুল হুদা খান জানান, “১৫ লক্ষাধিক টাকা বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। একাউন্ট অফিসের কর্মবিরতির কারণে বিল পাস হয়নি। বিলটি পাস হলেই দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স চালু করা হবে বলে আশা করছি।”
জনগণের সেবার গুরুত্বপূর্ণ এই সেবাটি চালু করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।