বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন

নেত্রকোণায় সাড়ে ৯ ঘন্টা পর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমপ্লিট শাটডাউন প্রত্যাহার

নেত্রকোণায় সাড়ে ৯ ঘন্টা পর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমপ্লিট শাটডাউন প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, নেত্রকোণার আলো ডটকম:

নেত্রকোণায় নানা দাবি আদায়ে  বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি  প্রত্যাহার করেছেন আন্দোলনকারী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সাড়ে ৯ ঘন্টা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির আওতায় বিদ্যূৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে জেলায়। এতে করে নেত্রকোণা পল্লীবিদ্যূৎ সমিতির আওতায় থাকা  জেলার দশ উপজেলা ও পাশের সুনামগঞ্জ জেলার  ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলাসহ ১২টি উপজেলার ৬ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ভোগান্তি পোহাতে হয়।

এদিকে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি শুরুর পর  স্থানীয় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনা শুরু করেন বিদ্যূৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে।

এদিকে আন্দোলন প্রত্যাহার করে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে নেত্রকোণা সদরের চল্লিশা এলাকায় সমিতির  দপ্তরে যায় সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর অনুরোধেও তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেনি।

বিদ্যূতের গ্রাহকেরা জানান,  সকাল থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকায়  ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা। বিদ্যুতের জন্য সবগুলো উপজেলার সরকারি দপ্তরগুলোতে   কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে।  বাসা বাড়ি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নানা পণ্য নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। হাসপাতাল, ক্লিনিকে বিঘ্নিত হয় চিকিৎসাসেবা।

কেন্দুয়া  পৌরশহরের ব্যবসায়ী আমিনুল হক  বলেন, সকাল থেকে বিদ্যুৎ নাই দোকানের ফ্রিজে থাকা সব মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল।  বিদ্যুৎ অফিসে কল দিয়েও কাউকে পাচ্ছিলামনা। পরে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বিদ্যুৎ আসে। আমরা সারাটাদিন ভোগান্তিতে আছিলাম।

মদন পৌর শহরের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম রুনু বলেন, সারাদিন বিদ্যুৎ নাই, কোন কাজ কর্ম করতে পারছি না। সন্ধ্যায় বিদ্যূৎ আইছে। আগে থেকে না জানায়া এইবায় বিদ্যূৎ বন্ধ কইর‌্যা আমরারে ভোগান্তিতে ফালানো ঠিক অয় নাই।

নেত্রকোণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম আবু সাইদ বলেন, অভিন্ন চাকরি বিধি ও অনিয়মিত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের নিয়মিত করার দাবিতে গত ১০ মাস ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ  আন্দোলন করে আসছি। যৌক্তিক আন্দোলনের কারণে কয়েকদিন আগে আমদের ২০ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অব্যাহতি দেওয়া কর্মকর্তাদের স্বপদে বহাল, গ্রেপ্তার কর্মকর্তার মুক্তি দেওয়াসহ অভিন্ন চাকরি বিধি ও অনিয়মিত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের নিয়মিত করার দাবিতে কমপ্লিট শাটডউন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

বারহাট্টা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মাহফুজুর রহমান বলেন, আরইবি ও পবিস একত্র করার দাবি করা হয়েছিল সেটা গ্রহণ করা হয়নি। উল্টো আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংস আন্দোলনের রুপ দিতে পায়তারা করছে আরইবি। গত সরকার ছাত্র আন্দোলনে যেভাবে দমন পীড়ন করেছিল, আরইবি এখন আমাদের সঙ্গে সেটাই করছে। আমাদের  ২০ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। একজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অব্যাহতি দেওয়া কর্মকর্তাদের চাকরিতে পূনর্বহাল, মামলা প্রত্যাহার সহ সকল দাবি মেনে নিতে হবে।

নেত্রকোণা পল্লী বিদ্যুত সমিতির জি এম প্রকৌশলী মোঃ মাসুম আহমেদ বলেন, আমি অফিস প্রধান হিসেবে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কথা বলে শাটডাউন তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছি সারাদিন। গ্রাহকদের ভোগান্তি কোন ভাবেই কাম্য নয়।

পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন,  জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস , নেত্রকোণায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাসহ আমি আন্দোলনকারীদের সাথে বৈঠকে বসি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই বৈঠকে প্রশাসনের সাথে শান্তিপূর্ণ আলোচনা শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে  আন্দোলনকারীরা বিদ্যূৎ সরবরাহ চালু করেন।

( নেত্রকোণার আলো ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না। )

Comments are closed.




© All rights reserved © 2024 www.netrakon-r-alo.com