বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
১১ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে এখন থেকে ৮ এপ্রিল হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ পালিত হবে। বিষয়টি আরটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির।
তিনি বলেন, ২০০৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডে প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ ৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পাশ করা হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসলে ২০০৯ সালের ১৭ তম রিজেন্ট বোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পরিবর্তন করে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এর তারিখ, ১১ সেপ্টেম্বর করা হয়। প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ অথবা ক্লাস শুরুর তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালিত হয়। আমাদের প্রকৃত বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ৮ এপ্রিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পরিবর্তন করে ১১ সেপ্টেম্বর করেছে। আমরা প্রকৃত দিনই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে উদযাপন করতে চাই। ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করলে ছাত্র-জনতার রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে।
ড. জাহাঙ্গীর কবির আরও বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয় এবং আজ সেই কমিটি আমাদের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে। রিপোর্টে তারা ৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালন করার সুপারিশ করেছেন। আগামীকাল বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত স্যারের অনুমতি সাপেক্ষে নোটিশ প্রকাশ করা হবে এবং আগামী একাডেমিক কাউন্সিল ও রিজেন্ট বোর্ড সভায় তা পাশ করা হবে। আমরা আগামী ৮ এপ্রিল ধুমধাম করে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করবো।
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরুর পূর্বে এটি ১৯৭৬ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (এইটিআই) হিসেবে কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করতো। পরে ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর ইনস্টিউটকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। এটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত একটি কলেজ ছিল।
পরে ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষ্যে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়। সেসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমানকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রকল্প পরিচালকের অধীনেই ২০০০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ব্যাচ ও ২০০১ সালে দ্বিতীয় ব্যাচ ছাত্র ভর্তি সম্পন্ন হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, প্রজ্ঞাপন, পরীক্ষা পদ্ধতি, উপাচার্য নিয়োগসহ নানাবিধ জটিলতার কারণে কার্যত অচল থাকে বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ২০০১ সালের ৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হয়। পরে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রজ্ঞাপন জারিতে আবারও জটিলতা দেখা দেয়। পরবর্তীতে আবারও শিক্ষার্থীদের দাবিতে ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ায় মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
পরে ১৬ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মো. মোশাররফ হোসাইন মিঞাঁকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।