বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ অপরাহ্ন
শেরপুর সংবাদদাতা, নেত্রকোণার আলো ডটকম:
শেরপুরের শ্রীবরদীতে বাওয়াত উৎসবে স্থানীয় মানুষের দলবেঁধে মাছ ধরার আনন্দমুখর দৃশ্য দেখা গেছে। উপজেলার তাতীহাটি নয়াপাড়া মৃগী বিলে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠেন।
শেরপুরে বাওয়াত উৎসব বলতে বোঝানো হয় নির্দিষ্ট তারিখে একটি বিল বা জলাশয়ে প্রচারণা চালিয়ে দলবদ্ধভাবে মাছ ধরা। আধুনিক যুগে এই প্রচারণায় ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যম যুক্ত হয়েছে। বন্যা ও প্রয়োজনীয় মাছের অভাবে গত ৫-৭ বছর ধরে এই উৎসব বন্ধ ছিল। তবে এ বছর বন্যা এবং প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার বিভিন্ন বিল ও জলাশয়ে ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব পুনরায় শুরু হয়েছে।
শ্রীবরদী উপজেলার মৃগী বিলের বাওয়াত উৎসব ছিল এলাকার মানুষের জন্য একটি বিশেষ আনন্দঘন মুহূর্ত। মানুষজন পলো, জাল, টেটা নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে এসে মাছ ধরতে নেমে পড়েন। কার্তিক মাসে শুরু হওয়া এই বাওয়াত উৎসব সাধারণত বিল-ঝিলের পানি কমে হাঁটুর সমান হয়ে এলে আয়োজন করা হয়। বিলপাড়ের মানুষই সাধারণত এ ধরনের উৎসবের আয়োজন করেন।
স্থানীয়রা জানান, বাওয়াত উৎসব তাদের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। তবে আগের মতো এখন আর মাছ পাওয়া যায় না। তবুও দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ দলবেঁধে আসে এবং উৎসবে মেতে ওঠে।
মাছ ধরতে আসা সফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি বাওয়াতে মাছ ধরার কথা শুনেছি, কিন্তু কোনোদিন আসিনি। আজ এসে মাছ ধরার অনেক আনন্দ পেলাম। এরকম আনন্দ আগে কখনো পাইনি।”
স্থানীয় করিম মিয়া বলেন, “আমরা আগে এই বিলে অনেক মাছ ধরতাম, কিন্তু এখন আর মাছ নেই, পানিও নেই। এবার পানি ছিল, তাই সবাই মাছ ধরতে নেমেছে।”
এদিকে, সমাজসেবক সোহান বলেন, “এই বিলগুলোতে মানুষ মাছ ধরে জীবন চালায় এবং বাওয়াত উৎসবে এসে আনন্দ উপভোগ করে। তবে প্রশাসন এসব বিল লীজ দেওয়ায় মানুষের সমস্যা হচ্ছে। আমরা চাই, এসব বিল লীজ না দেওয়া হোক।”
স্থানীয় মানুষ প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তারা যেন ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করে এবং বিলগুলোকে লীজ দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করে।