সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন
একে এম এরশাদুল হক জনি, নেত্রকোণা:
দীর্ঘ ১১ বছর পর নেত্রকোনা জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয়তা দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সারা দেশের মতো নেত্রকোণাতেও নতুন নেতৃত্ব গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী ৩০ আগস্ট রবিবার ঐতিহাসিক মোক্তারপাড়া মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে পুরো জেলা শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। রঙিন পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার, গেট ও তোড়ন নির্মাণে শহরজুড়ে জমেছে সাজসজ্জা। দীর্ঘদিন আহ্বায়ক কমিটির অধীনে চলার পর এবার জেলার ১০ উপজেলা ও ৫ পৌরসভা কমিটির মোট ১,৫১৫ জন কাউন্সিলর ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যেমে তারা সরাসরি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করবেন।
সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন- বর্তমান আহ্বায়ক ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. আনোয়ারুল হক ছাতা প্রতীকে ও জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক, সাবেক জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা বিএনপির নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক বিজ্ঞ জিপি এডভোকেট মাহফুজুল হক চেয়ার প্রতীকে।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন-বর্তমান জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী মাছ প্রতীক, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মনিরুজ্জামান দুদু ফুটবল প্রতীক ও জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি গরুর গাড়ি প্রতীক নিয়ে।
সভাপতি প্রার্থী ডা: আনোয়ারুল হক বলেন, আমার কাছে এই পদ কোনো মর্যাদার প্রতীক নয় — এটি একটি দায়িত্ব, একটি দায়বদ্ধতা, একটি আত্মত্যাগের অঙ্গীকার। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের প্রতিটি ধাপে ছিল ত্যাগ, সংগ্রাম ও সংকল্পের গল্প,দুর্দিনে আমি সকল প্রকার প্রতিকূলতার মধ্যে দলের সাথে ছিলাম এবং ভবিষ্যতেও থাকবো । সভাপতি পদে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
বিজ্ঞ জিপি এডভোকেট মাহফুজুল হক বলেন, আগামী ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আমাদের সম্মেলন। ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমি এখানে এসেছি। ছাত্র জীবন থেকে শহীদ জিয়ার একজন স্বাচ্ছা পরিক্ষিত সৈনিক হিসেবে আমি তৃণমূল বিএনপির সাথে সবসময়ই ছিলাম এখনও আছি এবং থাকবো। আশা করি তারা আমাকে সভাপতি পদে ভোটে জয়যুক্ত করবেন।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ডা. রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, “নানা মামলা-হামলার মধ্যেও আমি সবসময় দলের সঙ্গে ছিলাম। আশা করি কাউন্সিলররা আমাকে বিজয়ী করবেন।”
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এস এম মনিরুজ্জামান দুদু বলেন, “আমি শৈশব থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছি। কাউন্সিলরদের সমর্থন নিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হতে চাই।”
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন খান রনি বলেন, “আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি। অতীতের ত্যাগ-তিতিক্ষার স্বীকৃতি হিসেবে নেতাকর্মীরা আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করবেন বলে আশা রাখি।”
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন চলছে গণসংযোগ, প্রচার-প্রচারণা ও দৌড়ঝাঁপ। সাধারণ নেতাকর্মীরা বলছেন, তারা সৎ, ত্যাগী ও আদর্শবান নেতৃত্বকে নির্বাচিত করতে চান।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই সম্মেলন জেলা বিএনপির রাজনীতিতে নতুন গতি ও প্রাণ সঞ্চার করবে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।