বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন
নেত্রকোণার আলো ডটকম:
নিবন্ধ:
ইসলামের শিক্ষা অনুসারে সমাজে নৈতিকতাবোধ ও শালীনতার বিকাশই মানুষের চরিত্রের উৎকর্ষের দিকনির্দেশনা দেয়। চুরি বা ব্যাভিচারের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে সমাজে নারী ও পুরুষের ভিন্ন ভূমিকা এবং দায়িত্বশীলতার বিষয়টি ইসলামে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা কুরআনের সূরাহ নূরে যিনা-ব্যাভিচার নিষিদ্ধ করেছেন এবং এ প্রসঙ্গে নারী ও পুরুষের উল্লেখ করেছেন, যা আরবি ভাষার বিশেষ গ্রামাটিকাল কৌশল তাক্বদীম-তা’খীর অনুসরণ করে করা হয়েছে। অর্থাৎ, যাকে আগে উল্লেখ করা হয়েছে, তাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
চুরি বা ডাকাতির ক্ষেত্রে প্রথমে পুরুষদের উল্লেখ করা হয়েছে, কেননা সাধারণত পুরুষরাই এ ধরনের অপরাধে বেশি লিপ্ত থাকে। আর যিনা বা ব্যাভিচারের ক্ষেত্রে নারীকে প্রথমে উল্লেখ করার কারণ হিসেবে মুফাস্সিরগণ বলেছেন যে, নারীর শালীনতা ও সংযম এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নারীর আচরণ এবং পোশাক-পরিচ্ছদে পরিমিতিবোধ এবং সুরক্ষা বজায় থাকলে পুরুষের আকৃষ্ট হওয়ার প্রক্রিয়া অনেকাংশে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে।
বর্তমান সমাজে কিছু কিছু উদার মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিরা নারীদের আবেদনময়ী পোশাক বা আচরণকে স্বাধীনতা ও আধুনিকতার অংশ হিসেবে দেখে থাকেন। অনেকে দাবি করেন, এটি ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অংশ, এবং শারীরিক সৌন্দর্য প্রদর্শন অন্য সাধারণ স্বাভাবিক অঙ্গের মতোই। তবে, সামাজিকভাবে দেখা যায় যে, আবেদনময়ী পোশাক বা আচরণের ফলে পুরুষের মনোযোগ আকর্ষিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা অনেক সময় সম্পর্কের সীমা অতিক্রম করে।
ইসলামে নারী ও পুরুষ উভয়কেই সংযমী এবং সতর্ক থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তবে, মুফাস্সিরদের মতে, প্রলোভন সৃষ্টিতে যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নেয়, তাহলে সে নিজেই এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করছে। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী, নারীর শালীনতা বজায় রাখা কেবল তার ব্যক্তিগত দায়িত্ব নয় বরং সামাজিক ভারসাম্য রক্ষায়ও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
তাই যিনা-ব্যাভিচার বা অবৈধ সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইসলামের শিক্ষার আলোকে পুরুষ ও নারীর মধ্যে সংযম ও দায়িত্বশীলতা বজায় রাখাই মূল নির্দেশনা। ইসলামে সামাজিক অপরাধের প্রতিরোধ এবং একটি সুশৃঙ্খল সমাজ প্রতিষ্ঠায় উভয়ের দায়িত্ব রয়েছে ।
লিখক: আয়েশা সারা ফারহীন।
শিক্ষার্থী: “কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ” ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।