শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ অপরাহ্ন
নেত্রকোণার আলো ডটকম ডেস্ক:
ক্ষুধা একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া, যা শরীরের শক্তির চাহিদা পূরণের জন্য সংকেত দেয়। তবে খাবার খাওয়ার পরও যদি বারবার ক্ষুধার্ত লাগে, তবে এটি কোনো স্বাভাবিক চাহিদা নয়, বরং শরীরের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। কিছু অভ্যাস এবং জীবনযাপনের ধরন এ ধরনের অতিরিক্ত ক্ষুধার কারণ হতে পারে।
দ্রুত খাওয়ার কারণে মস্তিষ্ক ঠিকমতো পেট ভরার সংকেত বুঝতে পারে না। সাধারণত খাবার খাওয়ার পর মস্তিষ্কে পূর্ণতার সংকেত পাঠাতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। দ্রুত খাওয়ার ফলে এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং আপনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্ষুধার্ত অনুভব করেন। ধীরে ধীরে খাওয়ার অভ্যাস গড়লে এই সমস্যা কমে যায়।
শরীর যখন ডিহাইড্রেটেড হয়, তখন মস্তিষ্ক কখনো কখনো তা ক্ষুধার সংকেত হিসেবে প্রকাশ করে। এর ফলে পানি পান করার বদলে আপনি খাবার খেতে আগ্রহী হন। সারাদিন নিয়মিত পানি পান করে হাইড্রেটেড থাকলে এ ধরনের ভুল সংকেত এড়ানো সম্ভব।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরার অনুভূতি দেয়। পর্যাপ্ত প্রোটিন না খেলে ক্ষুধার সংকেত দ্রুত ফিরে আসে। ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, মটরশুটি এবং দইয়ের মতো প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখলে অতিরিক্ত ক্ষুধার অনুভূতি কমে।
ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন শাক-সবজি, ফলমূল ও দানা শস্য ধীরে হজম হয় এবং দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে। কম ফাইবারযুক্ত খাবার দ্রুত হজম হয়ে যায়, ফলে শরীরে আবার দ্রুত ক্ষুধার অনুভূতি তৈরি হয়। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ফাইবারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
ঘুমের অভাবে শরীরের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। ঘেরলিন হরমোন ক্ষুধা বাড়ায় এবং লেপটিন পূর্ণতার অনুভূতি দেয়। ঘুম কম হলে ঘেরলিনের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং লেপটিনের কার্যকারিতা কমে। ফলে বারবার ক্ষুধা অনুভূত হয়। সঠিক ঘুম ক্ষুধার হরমোনগুলোর ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করে।
ক্ষুধা কমানোর জন্য করণীয়: ধীরে ধীরে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন ও ফাইবারের পরিমাণ বাড়ান। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন (প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা)।
অপ্রয়োজনীয় খাদ্যাভ্যাস পরিহার করুন।
যদি এসব পরিবর্তন করার পরও অতিরিক্ত ক্ষুধার সমস্যা থেকে যায়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অতিরিক্ত ক্ষুধা অন্য কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।